ইসির মামলায় ৭ বছর জেল হতে পারে এরশাদের


গত ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু অধিকাংশ প্রার্থী তাদের ব্যয়ের রিটার্ন জমা দেননি। এরশাদও সময় মতো তার ব্যয়ের রিটার্ন জমা দেননি। বেঁধে দেয়া এক মাসের মধ্যে এরশাদ নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নির্বাচন কমিশন এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন আইন শাখার তথ্যানুসারে, এ মামলায় দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। সুতরাং ইসির এই মামলায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী জাপা চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৭ বছর জেল হতে পারে।
উল্লেখ্য, দশম সংসদ নির্বাচনে জাপার চেয়ারম্যান এরশাদ রংপুর-৩, লালমনিরহাট-১ ও ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। পরে তিনি ঢাকার আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এরশাদ রংপুর-৩ আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসেন এবং ওই আসনের ভোটের ব্যয় রিটার্নও দাখিল করেন তিনি। তার ব্যয় রিটার্নে তিনি ৩৮ হাজার ৫শ’ টাকা ব্যয় উল্লেখ করেন।
কিন্তু লালমনিরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে হারেন এরশাদ। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, এই আসনে জাসদ ও আওয়ামী লীগের অপর দুই প্রার্থীর ব্যয় বিবরণী দেয়া আছে। কিন্তু এরশাদের ব্যয় বিবরণী এখনো পাওয়া যায়নি উল্লেখ আছে।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক হাবিবুর বলেন, জাপা চেয়ারম্যানের লালমনিরহাট-১ আসনের ব্যয় রিটার্ন আমাদের অফিস পায়নি। তার বিরুদ্ধে মামলার সময় এখনও রয়েছে। কেন তিনি সময় মতো তা জমা দেননি তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ বলেন, শুধু কেবল এরশাদ নয়, যারা সময় মতো ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২টি দল অংশ নেয়। এ নির্বাচনে ৫৪৩ জন প্রার্থী অংশ নেয়। এরমধ্যে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। জয়ী-বিজিত প্রার্থীকে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে গেজেট প্রকাশের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। সেই সঙ্গে এর অনুলিপি ইসি সচিবালয়ে ডাকযোগে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে ব্যয় রিটার্ন জমা না দিলে তার দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব মিহির সারোয়ার মোর্শেদ জানান, নবম সংসদে অন্তত ৫০ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এসব মামলা এখনো চলমান রয়েছে। দশম সংসদ নির্বাচনে যারা ব্যয়ের হিসাব জমা দেননি তাদের ব্যাখ্যা নেয়ার কোনো অবকাশ নেই। তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে। ইতিমধ্যে ব্যয়ের হিসাব জমা না দেয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জানাতে সংশ্লিষ্ট শাখায় চিঠি দেয়া হয়েছে।

Techvoice template ad banner
Related Posts
Previous
« Prev Post