ওমর ফারুক চট্টগ্রাম ব্যুরো
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, বুধবার,
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শাখা থাকতে পারে না। তারপরও শাখা রয়েছে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের। চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি, হালিশহর ও এমএম আলী রোডে সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ নাম ব্যবহার করে তিনটি ক্যাম্পাসে শিাকার্যক্রম চলছে। তবে এই ক্যাম্পাসগুলো তাদের নয় বলে দাবি করলেন সাদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রেজারার সরওয়ার জাহান। তিনি বলেন, একটি মহল সাদার্ন ইউনিভার্সিটি নাম ব্যবহার করে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে প্রতারণা করছে। ক্যাম্পাসগুলোর কোনো বৈধতা নেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাদার্ন ইউনিভার্সিটি ২০০২ সালে শিাকার্যক্রম শুরু করে। এখানে সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের নামে পাঁচটি ক্যাম্পাস রয়েছে। এর মধ্যে ৭৩৯/এ মেহেদীবাগ এবং ২২, শহীদ মির্জা লেইন মেহেদীবাগ মূল ক্যাম্পাস ছাড়া বাকি তিনটিকে অবৈধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। কমিশন ২০১২ সালের ১১ অগাস্ট পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ক্যাম্পাসগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বৈধ ক্যাম্পাসের তালিকায় ছিল ৭৩৯/এ মেহেদীবাগ এবং ২২, শহীদ মির্জা লেইন মেহেদীবাগ ক্যাম্পাস। বাকি তিনটি ক্যাম্পাস তাদের দৃষ্টিতে অবৈধ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বৈধ ক্যাম্পাস ছাড়া বাকিগুলোতে শিাকার্যক্রম চালানো অবৈধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক অবৈধ ক্যাম্পাসগুলোতে লোভনীয় প্রচারণার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম চলছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে বিলবোর্ডের মাধ্যমে নিজেদের সাদার্ন ইউনিভার্সিটির বৈধ ক্যাম্পাস বলে দাবি করছে ক্যাম্পাস তিনটির কর্তৃপ। এতে প্রতারিত হচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।
এই বিষয়ে সাদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রেজারার সরওয়ার জাহান নয়াদিগন্তকে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ তার মেহেদীবাগের মূল ক্যাম্পাস ছাড়া সব শাখা ক্যাম্পাস বন্ধ এবং অবৈধ ঘোষণা করে। কিন্তু শাখা ক্যাম্পাস তথা অবৈধ ক্যাম্পাসের তথাকথিত পরিচালকেরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ণ হীন স্বার্থে ও লোভের বশবর্তী হয়ে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির মাধ্যমে প্রতারিত করছে।’
শাখা ক্যাম্পাসের পরিচালকেরা অভিযোগ করেন, ‘সাদার্ন ইউনিভার্সিটি মূল ক্যাম্পাস অর্থাৎ মেহেদীবাগ ক্যাম্পাসের সাথে চট্টগ্রামের জিইসি, হালিশহর ও এমএম আলী রোড শাখার সাথে ২০০৭ সালে ১০ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি স্বারিত হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক তারা শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু এখন মূল ক্যাম্পাস আইনের দোহাই দিয়ে চুক্তি বাতিল করে শাখা ক্যাম্পাসগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করে।’
চুক্তি প্রসঙ্গে সরওয়ার জাহান বলেন, ‘যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি এবং আইন পরিবর্তন হলে চুক্তি পরিবর্তন হতে পারে। যেহেতু শাখা ক্যাম্পাস বন্ধের বিষয়টি পুরোপুরি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত সেহেতু শাখা ক্যাম্পাস বন্ধ করা ছাড়া সাদার্ন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপরে কিছু করার ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে অবৈধ ক্যাম্পাস পরিচালনাকারীদের বিষয়ে সিএমএম কোর্টে মামলা করা হয়েছে, যা বিচারাধীন।
তিনি বলেন, যারা সাদার্ন ইউনিভার্সিটির সুনাম ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত তাদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবেলা করা হবে।