কাউকে অর্থ ধার দেওয়ার আগে যে ৭টি বিষয় বিবেচনা করবেন

অর্থ ছাড়া জীবন চালানো যায় না। নিজেরসহ পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে সুন্দর জীবন দিতে অর্থের বিকল্প নেই। আবার এই প্রয়োজনীয় অর্থই অনর্থের মূল কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে সবাই মানেন। অথচ আমাদের হরহামেশাই মানুষের সঙ্গে অর্থের লেনদেন করতে হয়। নিজের প্রয়োজনে যেমন ঋণ নিতে হয়, তেমনি কাছের মানুষদের ঋণ দিতেও হয়। গোটা প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারলেই আর বিপদগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এখানে দেখেন নিন, ঋণ দেওয়ার সময় যে ৭টি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
১. পরিস্থিতির বিশ্লেষণ : যখন কাছের কাউকে অর্থ ধার দেবেন, তখন গোটা পরিস্থিতি আরেকবার বিবেচনা করে নেওয়া উচিত। সত্যিকার অর্থেই কারো প্রয়োজন হলে তবেই এগিয়ে যান। তা ছাড়া প্রথমেই কেউ ঋণ চাইলে তা মোটেও ভালো লাগে না। সে ক্ষেত্রে তার প্রয়োজনটা বুঝতে আলোচনা করুন। তবে ভবিষ্যতে এই অর্থ যেন আপনাদের সম্পর্কে চিড় না ধরায়, তা এখনই নিশ্চিত করে নিন।
২. নিয়ম-কানুন নিয়ে আলোচনা : ঋণ দেওয়ার সময় আবেগকে প্রশ্রয় দেবেন না। ঋণগ্রহীতা অর্থ কীভাবে ফেরত দেবেন তা নিয়ে খোলাসা করে আলোচনা করুন। আবার এসব নিয়ে খুব বেশি বেশি কথা বলা বা একেবারেই কথা না বলাও সন্দেহের সৃষ্টি করে। তাই পরিশোধের নিয়ম-কানুনের প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করুন।
৩. ঋণ দেওয়ার সামর্থ্য : এমন পরিমাণ ঋণ দিন যা আপনার সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, যিনি নিচ্ছেন তিনি ফেরত দিতে পারবেন কিনা তাও বুঝতে হবে আপনার। তাই নিজের সামর্থ্য এবং গ্রহীতার সামর্থ বুঝে ঋণ দেওয়া উচিত।
৪. সময় বেঁধে নিন : যদি কাছের কারো কাছ থেকে অর্থ ধার নিয়ে থাকেন, তবে তা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় ধরে নিয়ম ঠিক করুন। তাই বলে গ্রহীতা যত বেশি সময় চাইবেন, আপনি তত সময় দেবেন তা নয়। পাশাপাশি আপনারও দায়িত্ব এমন সময় দেওয়া যাতে করে পরিশোধের জন্যেও গ্রহীতার কাছে তা সহনীয় হয়।
৫. সুদ নয় : কাছের কোনো মানুষকে ঋণ দিলে সেখান থেকে সুদ নেবেন না। আপনি যদি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের মতো আচরণ করেন, তবে সম্পর্ক কোথায় থাকলো? আর তিনিই বা আপনার কাছে আসবেন কেন? এসব ক্ষেত্রে মানুষের অতি প্রয়োজনের সুযোগ নিয়ে আপনি সুদ চাপিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু তাতে আপনাদের সম্পর্ক আজীবনের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৬. অভ্যাসে পরিণত করবেন না : আপনি হয়তো বন্ধু-স্বজনের কাছে একজন পরিচিত উপকারী মানুষ। মাঝে মধ্যে অর্থ ধার দেওয়ার মাধ্যমে বড় ধরনের সাহায্য করা যায়। তাই বলে টাকা ধার দেওয়া নিজের অভ্যাসে পরিণত করবেন না। এতে করে যারা ঋণ নিয়েছেন তারা সব সময় আপনার কাছে ধরনা দেবেন। ফলে এক সময় ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে।
৭. সাক্ষী রাখুন : কাউকে অর্থ ধার দেওয়ার সময় পরিচিত দুই-একজনকে সাক্ষী হিসেবে রাখুন। এটা সাধারণ নিয়মের মধ্যেই পড়ে। অনেকেই বলেন, সাক্ষী এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, সন্তানকে ধার দেওয়ার সময়ও কাউকে না কাউকে সাক্ষী রাখতে হয়। এর পর পর্যবেক্ষণ করুন, কোন মানুষগুলো আপনার অর্থ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে এসে ফেরত দিচ্ছে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Techvoice template ad banner
Related Posts
Previous
« Prev Post