মন্ত্রী জি এম কাদেরকে পদত্যাগের নির্দেশ



মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০১৩, ০৭:১৯ অপরাহ্ন

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার ছোট ভাই জি এম কাদেরকে মহাজোটের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে বৈঠকের পর দিনই তাকে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদেরও পদত্যাগপত্র তৈরি করে রেখেছেন। এখন শুধু পার্টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপো বলে পার্টির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। জাপা সূত্র জানায়, বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের এক মাস আগে থেকেই পদত্যাগপত্র পেশ করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। তবে সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রা করে চলেনÑ পার্টির এমন বেশ কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নিতান্তই সৌজন্যের খাতিরে হলেও প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর পরই পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ করায় তিনি আর এগোননি। পদত্যাগে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি গতকালের নিয়মিত মন্ত্রিসভা বৈঠকেও যোগ দেননি বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে। সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগপন্থী ও মুক্তিযুদ্ধের পরে নেতা হিসেবে জি এম কাদের আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ হলেও সরকারের বেশ কিছু সিদ্ধান্তে তিনি একমত হতে পারেননি। বেশ কয়েক মাস আগে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু নানা চাপে শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেননি। তবে জাতীয় পার্টি এখনই মহাজোট ছাড়ছে না। জিএম কাদেরও আরো কিছু দিন সরকারে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেণ করে যাবেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দু-এক দিন আগে এরশাদ মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিতে পারেন। ঠিক তার পরেই জিএম কাদেরও পদত্যাগ করবেন। এরশাদের ঘনিষ্ঠ পার্টির একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোটে থাকার জন্য গত বুধবার একটি প্রতিবেশী দেশের অনুরোধ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন এরশাদ। বিদ্যমান বাস্তবতায় তিনি তাদের অনুরোধ বিবেচনা করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রটির দাবি। এ দিকে মহাজোটে থেকেই জাতীয় পার্টির আগামী নির্বাচন করার ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে আগ্রহ ও চাপ থাকলেও পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব কাজ করছে। পার্টির নেতাকর্মী ও জনগণের নার্ভ বুজে এরশাদ সাম্প্রতিকালে বলছেন, শেষ বয়সে এসে দালাল হিসেবে জাতির কাছে কলঙ্কিত হতে চাই না। ফলে মতাসীনদের সাথে এরশাদ যে আর থাকছেন নাÑ এটা প্রায় চূড়ান্ত। পার্টির হাতেগোনা কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও তাদের অনুগামীরা এর বিরোধিতা করছেন। এ ছাড়াও রযেছে পাশের একটি বৃহৎ শক্তির চাপ। জাপা সূত্র জানায়, পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা ও তৃতীয় একটি মাধ্যমে এরশাদ বিএনপির সাথে আস্থাশীল সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বিএনপি তাকে পুরোপুরি আস্থায় না নিলেও মহাজোট থেকে তাকে বের করে আনাই হবে তাদের বড় অর্জন। তবে অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস ঘেঁটে এখনো দোটানায় আছেন এরশাদ। মন চায় মহাজোট ছাড়তে। কিন্তু রিস্ক নিতে সাহস পাচ্ছেন না। যদি অন্য কিছু ঘটে যায়Ñ এই আশঙ্কাও কাজ করছে তার ভেতরে। ফলে প্রধান দুই দলের আচরণে দ্বিধান্বিত এরশাদ ‘একলা চলো নীতি’র কথা বলছেন। এরশাদের ঘনিষ্ঠ একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, বিএনপি না গেলে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বললেও এটি তার শেষ কথা কি নাÑ তা নিয়েও সংশয় রয়েছে তাদের। সরকারের প্রতি মানুষের যে অসন্তোষ রয়েছে, তাতে বিএনপি নির্বাচনে না এলে জাতীয় পার্টির যোগ্য প্রার্থীদের ভোটারেরা বিকল্প হিসেবেও বেছে নিতে পারেন। এ আশা থেকেই দলীয়ভাবে নির্বাচন করার বাসনা রয়েছে তার। তার ওপর রয়েছে আঞ্চলিক রাষ্ট্রীয় শক্তির প্রচণ্ড চাপ

Techvoice template ad banner
Related Posts
Previous
« Prev Post