তিন রুপি নিয়ে ঘর ছেড়েছিলেন অজয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
 একসময় অ্যাকশন ছবির নায়ক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন বলিউড সুপারস্টার অজয় দেবগন। কিন্তু গত দু’বছরে ট্র্যাক চেঞ্জ করেছেন তিনি। শুধু অ্যাকশন বা সিরিয়াস নয় রীতিমত কমেডি ছবিতেও চুটিয়ে অভিনয় করছেন। সফলতাও পাচ্ছেন। প্রতি বছরই একাধিক হিট ছবি ঝুলিতে ভরছেন।
 
সামনে মুক্তি পাচ্ছে রাজনৈতিক ছবি ‘সত্যাগ্রহ’। বাবা-ছেলের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এ ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন কারিনা কাপুর। প্রকাশ ঝা পরিচালিত এ ছবিতে আরো রয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, অর্জুন রামপাল ও মনোজ বাজপেয়ি। সম্প্রতি সত্যাগ্রহ নিয়ে অজয় কথা বলেন ‘টাইমস অব ইন্ডিয়ার’ সঙ্গে। এ সময় অভিনয়ে আসা, বাবা-মায়ের প্রেম  এবং নিজের একান্ত বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেন অজয়।
 
অজয়ের জন্ম পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরে। বাবা-মা চাইতেন ছেলে হবে পুলিশ। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই অজয়ের আগ্রহ ছিল অভিনয়ে। বলিউডের ছবিতে নায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন স্বপনে জাগরণে। স্বপ্ন পূরণে একদিন পকেটে মাত্র তিন রুপি নিয়ে ঘর পালালেন। কিন্তু টিকেট ছাড়া রেল ভ্রমণের দায়ে পুলিশের হাতে আটক হয়ে এক সপ্তাহ হাজতে কাটান। পরে খোঁজ পেয়ে বাবা-মা ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে আনেন।
 
কিন্তু ফিরলে কি হবে? অজয়ের মনতো পড়ে রয়েছে বলিউডে। কাজেই আবার ঘর পালালেন। সোজা গিয়ে হাজির হলেন মুম্বাইয়ে। কিন্তু এখানে তার থাকার জায়গা নেই। কী করা! এক ট্যাক্সিচালকের দয়ায় রাতে তার ট্যাক্সিতে ঘুমানোর জায়গা পেলেন। তবে শর্ত ছিল প্রতিদিন ট্যাক্সি পরিষ্কার করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে  প্রতিদিন তাই করতেন। পকেটে পয়সা নেই। তাই বহু দিন না খেয়ে কাটিয়ে দিতেন। মহারাষ্ট্রের এক দয়াবতী নারী তাকে বিনে পয়সায় কলা খেতে দিতেন। নিত্য প্রয়োজন মেটাতে একসময় ছুতারের কাজ শুরু করেন। একটানা কাঠ চেরাইয়ের শব্দের মধ্যেও যেন অভিনয়ের আনন্দ পেতেন। শেষে শুরু করেন মস্তানি আর গুণ্ডামি। একদিন ফাইট ডিরেকটর রবি খান্না তাকে মুম্বাইয়ের রাস্তায় মারামারি করতে দেখে পছন্দ করে ফেলেন। তার সহকারী করে নেন। তবে খান্নার স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো ছিল না। শেষে স্বাস্থ্য বেশি খারাপ হতে থাকলে তিনি অজয়ের বাবা বীরু দেবগনকে তার জায়গায় কাজ করতে বলেন। কয়েক বছর  পর তার বাবা বলিউডে অ্যাকশন পরিচালক হিসেবে সফলতা পান।
 
সাক্ষাৎকারে অজয় তার বাবা মায়ের প্রেমের কথাও উল্লেখ করেন। তাদের প্রেম বাংলা সিনেমাকে হার মানায়। বাবা বীরু দেবগন তার মা মিনা দেবগনকে দেখেন এক বাসস্টেশনে। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যান। এরপর তার পিছু নেন। চার বছর ধরে ঘুর ঘুর করার পর বীরুর সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন মিনা। এরপর মহালক্ষির মন্দিরে দু’জন দেখা করেন। এরপর আরো দু’বছর প্রেম করার পর নিজের বাবার কাছে পছন্দের কথা জানান মিনা। কিন্তু একজন ফাইট ডিরেক্টরকে মেয়ের জামাতা হিসেবে পছন্দ ছিল না অজয়ের নানার। ফলে বাড়ি পালিয়ে বিয়ে করেন অজয়ের বাবা মা।
 
অজয়ের বাবা মারা গেছেন ১৯৯৯ সালে। মা, মেয়ে আর স্ত্রী কাজলকে ঘিরেই আবর্তিত হয় অজয় দেবগনের ব্যক্তিগত জীবন। স্বল্পভাষী এ বলিউড সুপারস্টার প্রযোজক হিসেবেও সফল।

Techvoice template ad banner
Related Posts
Previous
« Prev Post