মুহিতকে একহাত নিলেন কাদের

মুহিতকে একহাত নিলেন কাদের
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
ঢাকা: পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ওপর এক হাত নিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “বয়সের ভারে অর্থমন্ত্রী অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলেন।” এমনকি তিনি অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে  ‘মেমোরি ডাউন’, ‘এজ গোজ আপ’ ইত্যাদি বিশেষণও ব্যবহার করেন।

উল্লেখ্য, দরপত্র আহবান করা হলেও ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।  

বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার যে টাইট শিডিউলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এতে করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যাদেশ দেয়া সম্ভব হবে কি না। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।”

কিন্তু বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুর কাদের বলেন, “অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের যা বলেছেন, তা এভাবে উনি বলতে পারেন না। এটা টেকনিক্যাল কমিটির বিষয়। টেকনিক্যাল কমিটি এ বিষয়ে বলতে পারে।”

অর্থমন্ত্রীর ‘অতিকথন’ প্রসঙ্গে যোগাযোগমন্ত্রী আরও বলেন, “অর্থমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের কথা বলুক। কিন্তু তার কাজ সব মন্ত্রণালয় নিয়ে কথা বলা।”

রাজনীতিবিদদের সতর্কভাবে কথা বলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ওবায়দুল কাদের এ সময় বলেন, “জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝে কথা বলা উচিত।”

এছাড়া অর্থমন্ত্রীর বয়স হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন “তার (অর্থমন্ত্রী) এজ গোজ আপ, মেমোরি ডাউন, এ বয়সে এমন আমাদেরও হতে পারে”।

তবে পদ্মা সেতু কাজ শুরু হওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে তা যেন প্রকারান্তরে স্বীকার করেই নিলেন যোগাযোগমন্ত্রী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “স্ট্যান্টবাজি করে লাভ নেই, পদ্মা সেতু নির্মাণে সময় লাগবে ৪ বছর। বর্তমান সরকারের বাকি ৪ মাসে পদ্মা সেতুর মূল কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। এই ৪ মাসে আমরা বিপ্লব ঘটাতে পারবো না।”

‘তাহলে অর্থমন্ত্রীর পক্ষেই তো আপনার অবস্থান’, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, “উনি এ বিষয়ে কনসার্ন না। সেতু বিভাগের টেকনিক্যাল পারসন এ কথা বলতে পারেন।”

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “পদ্মা সেতুর মূল কাজের টেন্ডার হয়েছে। শিগগিরই এর ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হবে। তারপর সময় মত কাজও শুরু হবে। পরবর্তী ইলেকশন সব কিছু নয়, পরবর্তী জেনারেশনই সব কিছু। তাদের কথা চিন্তা করেই পদ্মা সেতুর কাজ করছি।”

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রিতা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন,“পদ্মা সেতুর বিষয়ে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। বিশ্বব্যাংক দ্বিতীয় দফায় যখন আবার ফিরে আসে, তখন আর অপেক্ষা করা ঠিক হয়নি। তখনই আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ ছিল। তাহলে আর এ বিলম্ব হতো না।”

এদিকে বৃহস্পতিবারও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে নিজের  বক্তব্যে অটল থাকেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ আমি কাগজপত্র দেখেই কথা বলেছি।”

তবে পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির পরস্পরবিরোধী  বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।


Techvoice template ad banner
Related Posts
Previous
« Prev Post