এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসুন



সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিরোধী দলকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচনের উদাহরণ টেনে গতকাল রোববার তিনি সংসদে বলেছেন, আর কোনো অসাংবিধানিক সরকার আনার চেষ্টা করবেন না। তাতে কারও লাভ হবে না, নির্বাচনই হবে না।
এর আগে বেলা সোয়া তিনটায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হলে অনির্ধারিত আলোচনায় বিএনপির সাংসদ মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে, সরকার এখন এমন কথা বলবে। আমরা এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করব। চার সিটিতে বিরোধী দল-সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হওয়ার পরও নির্দলীয় সরকারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কারণ, জাতীয় নির্বাচন ও সিটি নির্বাচন এক নয়, আকাশ-পাতাল ব্যবধান। আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে।’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অসাংবিধানিক সরকার আনলে কারও লাভ হবে না। নির্বাচনই হবে না। আর যাঁরা ডিগবাজিবিশারদ, তাঁদের অসুবিধা নেই, অন্যদের অসুবিধা হবে। নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনেই হবে। জনগণ চাইলে ক্ষমতায় থাকব, না চাইলে থাকব না। জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকাকে ঘৃণা করি।’
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-সমর্থিত নবনির্বাচিত মেয়রদের অভিনন্দন জানান এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, জিয়া, এরশাদ ও বিরোধীদলীয় নেতার (খালেদা জিয়া) সময়ের প্রতিটি নির্বাচনই ভোট চুরির নির্বাচন। এবার আওয়ামী লীগ সরকার ছিল বলেই জনগণ ভোট দিতে পেরেছে। প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগের সময় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ভোটের এই অধিকার দেওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় আমরা জনগণের কাছে তাদের সাংবিধানিক অধিকার তুলে দিতে পেরেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন ফল বেরুচ্ছিল, তখন আমি বলেছি, কোনো গন্ডগোল দেখতে চাই না। জনগণ যাকে ভোট দেবে মেনে নিতে হবে।’
পঁচাত্তরের পর ভোট চুরির ইতিহাস শুরু হয়, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের সময় হ্যাঁ-না ভোট, রাষ্ট্রপতি ও সংসদের ভোট হয়। ভোট ডাকাতি, ভোট চুরি কী হয়নি! তখন নির্বাচন মানেই ‘১০টা হোন্ডা, ২০ গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ফল ঘোষণা আটকে ছিল। জনগণের পাহারায় ফল দিতে হয়েছে। ২০০৪ সালে ঢাকা-১০, মিরপুর উপনির্বাচন, মাগুরা উপনির্বাচনে ভোটের হিসাব পাল্টে গেল—এটাই ছিল বাস্তবতা। নির্বাচন মানেই ছিল আতঙ্ক, নির্যাতন, অত্যাচার, কালোটাকার প্রভাব, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালটে সিল আর বাক্স ভরা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে পাঁচ হাজার ৬৪৬টি নির্বাচন হয়েছে। একটিতেও কারচুপি হয়েছে, সরকার হস্তক্ষেপ করেছে—এমন অভিযোগ কেউ করতে পারবে না।

Techvoice template ad banner
Related Posts
Previous
« Prev Post