আজ ৯৩ বছরে পা দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজ ৯৩ বছরে পা দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়



নানা ইতিহাসের সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৯২ বছর অতিক্রম করেছে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টি ৯২ শেষ করে ৯৩ বছরে পা দিচ্ছে। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' শীর্ষক শিরোনামে দিবসটি পালিত হবে। আজ সকাল ৯টায় প্রশাসনিক ভবনসংলগ্ন চত্বরে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জমায়েতের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দিনটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় পতাকা ও হলগুলোয়ে পতাকা উত্তোলন, কেক কাটা এবং শোভাযাত্রা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ আলাদা অলাদা কর্মসূচি পালন করবে।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। টিএসটি, কলা ভবন ও কার্জন হলকে সাজানো হয়েছে লাল-নীল বাতি দিয়ে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রশাসনিক ভবনসংলগ্ন চত্বরে দিবসটির কর্মসূচির উদ্ধোধন করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বিশেষ অতিথি থাকবেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ছাড়াও নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।

তৎকালীন পূর্ব বাংলার জনসাধারণকে উচ্চশিক্ষায় আলোকিত করার লক্ষ্য নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পুরো জাতির উচ্চশিক্ষা ও সব আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। জাতির সংকট ও দুর্দিনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
বিস্তারিত পড়ুন

রাজশাহী বিভাগে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

রাজশাহী বিভাগে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট
রাজশাহী বিভাগে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজশাহী বিভাগে আজ সোমবার সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বিভাগীয় কমিটির এক যৌথ সভায় এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। ফলে আজ সকাল ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগে বাস-ট্রাক, ট্যাংক-লরিসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন রবি বলেন, ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। বিষয়টি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অবহিত করতে রাজশাহীসহ বিভাগের আট জেলায় মাইকিং হচ্ছে। তিনি জানান, লাইসেন্স নবায়নের নামে হয়রানি বন্ধ, পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান, হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ, মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, যমুনা সেতুর ওজন প্লাজায় বাসচালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় ও হয়রানি বন্ধসহ ১০ দফা দাবি তাঁদের দীর্ঘদিনের। কিন্তু সরকার এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য একের পর এক আশ্বাস দিয়ে এলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের লজ্জায় ডুবিয়ে বিশ্বকে ব্রাজিলের বার্তা (ভিডিও)

 বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের লজ্জায় ডুবিয়ে বিশ্বকে ব্রাজিলের বার্তা (ভিডিও)
উত্সব কিংবা উল্লাসটা যত বিস্ফোরক হওয়ার কথা ছিল, ঠিক ততটা হলো না। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর নেইমার-ফ্রেডরা উদযাপন করলেন বটে, তাতে ঠিক প্রত্যাশিত বুনো উল্লাসটা থাকল না। সবচেয়ে বেশি আবেগাক্রান্ত মনে হলো কেবল ডেভিড লুইজকে। মারাকানার অদূরবর্তী ক্রাইস্ট দ্য রেডিমার মূর্তিটার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দুই পাশে দুই হাত ছড়িয়ে দিয়ে যেন প্রার্থনায় নিমগ্ন হলেন। নেইমার দুই পাক সাম্বাও নেচে নিলেন। বাকিরা কাঁধে কাঁধে হাত রেখে বৃত্ত বানিয়ে খানিকক্ষণ ঝাঁপালেন। ব্যাস, শেষ!
অথচ ব্রাজিল খ্যাপাটে কোনো উত্সবে মেতে উঠতেই পারত। ফুটবলবিশ্বকে পাঁচ বছর ধরে শাসন করে আসা স্পেন, ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরোর শিরোপাত্রয়ীর ইতিহাস গড়া স্পেন, অদম্য-অপ্রতিরোধ্য স্পেনকে কাল ব্রাজিল বাধ্য করল তাদের সামনে মাথা নুইয়ে কুর্নিশ করতে। টিকি-টাকার টিকটিক ঘড়িটাকে অচল করে দিয়ে বেয়াড়া নাচন নেচে উঠল জেগো বনিতো। স্পেনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কনফেডারেশনস কাপের হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতল ব্রাজিল। ফুটবল বিশ্বকেই দিয়ে রাখল বার্তা, ‘আমরা আবার রাজ্য ফিরে পেতে প্রস্তুত!’
ঘুম আর পিঁচুটি লেপটে থাকা চোখে যাঁরা দেরিতে টিভি খুলে বসেছেন, কিংবা যাঁরা খেলাই দেখেননি, এইমাত্র জানলেন ম্যাচের ফল; চোখ কচলে দুইবার তাকাতে বাধ্য হবেন নিশ্চিত। কয়েক বছর ধরে ফুটবলকেই নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা স্পেনকে রীতিমতো লজ্জায় ডুবিয়ে বিশ্বকাপের মহড়া টুর্নামেন্ট জিতল ব্রাজিল। স্পেনের রাতটা আরও বিষাদময় করে দিল ৫৫ মিনিটে সার্জিও রামোসের পেনাল্টি মিস, ৬৭ মিনিটে নিজের নতুন বার্সা সতীর্থ নেইমারকে বাজে ফাউল করে, দর্শক আসনে শাকিরাকে বিমর্ষ করে দিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া জেরার্ড পিকে।
জোড়া গোল করে ফাইনালের নায়ক বনে গেলেন ফ্রেড। এক গোল করে এবং ফ্রেডের দুটো গোলেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান রেখে টুর্নামেন্টটাকে সত্যিকার অর্থেই নেইমারময় করে তুললেন ব্রাজিল ফুটবলের নবজাগরণের নতুন দূত, অবিশ্বাস্য লাগে ছেলেটার বয়স মাত্র একুশ!
এই মারাকানাতেই সর্বশেষ ফিফা আয়োজিত কোনো টুর্নামেন্টে ব্রাজিল ডুবে গিয়েছিল হতাশার গাঢ় অন্ধকারে। আলসিদেস ঘিঘিয়া নামের এক উরুগুইয়ান ‘ঘাতক’ স্বপ্নটা খুন করে দিয়েছিল ব্রাজিলের। ১৯৫০ বিশ্বকাপের সেই দুঃস্মৃতির অনেকটাই মাটি চাপা দিল ব্রাজিল। বাকি যেটুকু থাকল, সেটিও ২০১৪ বিশ্বকাপে ধুয়ে-মুছে ফেলবে নিশ্চিত। খুব বেশি দিন সময় পাননি, কিন্তু এরই মধ্যে তরুণতর এই দলটাকে সাজানো-গোছানো সংসার বানিয়ে ফেলেছেন লুইস ফেলিপে স্কলারি।
১৯৫০ বিশ্বকাপের স্মৃতিটা কাল আরও একভাবে ফিরে আসতে চাইল। সেবার মারাকানাতেই ব্রাজিলের কাছে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল স্পেন। যেটি তাদের ইতিহাসেরই অন্যতম বড় পরাজয়। প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ২০১০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের পর থেকেই অপরাজিত, ম্যাচের সংখ্যায় আগের টানা ২৯ লড়াইয়ে হারের স্বাদ না-পাওয়া সেই স্পেনই কিনা কাল পড়তে যাচ্ছিল এমনই এক লজ্জায়! স্পেনকে ব্রাজিল মনে করিয়ে দিল, তাদের জার্সিতে একটাই তারকা আঁকা, কিন্তু পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নের প্রতীক হিসেবে হলুদ জার্সিতে শোভা পাচ্ছে পাঁচ-পাঁচটি তারা। ফুটবলের আসল সম্রাট তো ব্রাজিলই।
ব্রাজিল রূপকথার শুরুটা একেবারে ম্যাচের দেড় মিনিটের মাথায়। ফেনোমেনন রোনালদোর স্মৃতি উসকে দেওয়া ফ্রেডের এক গোলে। ভূপাতিত ফ্রেড মাটিতে শুয়ে থেকেই ওই অবস্থাতেই যে শটটা নিলেন, বিশ্বের এক নম্বর গোলপ্রহরী ইকার ক্যাসিয়াসের কিছুই করার থাকল না।
শুরুতেই এভাবে গোল খেয়ে স্পেন যেন হকচকিয়ে গেল। ব্রাজিলকে পেয়ে বসল গোলের নেশা। মুহুর্মুহু আক্রমণে স্পেনকে ব্যতিব্যস্ত করে তুললেন অস্কার-নেইমার-ফ্রেড। দ্বিতীয় গোলটা ব্রাজিল যেকোনো মুহূর্তেই পেয়ে যাবে, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। ব্রাজিলের সেই অপেক্ষা ফুরাল প্রথমার্ধের শেষ মাথায়। অস্কারের দুর্দান্ত পাসে বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে বাঁ পায়ে যে শটটা নিলেন নেইমার, ক্যাসিয়াস তো ক্যাসিয়াস, চীনের প্রাচীরেরও সাধ্য ছিল না তা রোখে।
প্রথমার্ধেই ২-০। খেলাটাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খুন করে ফেললেন ফ্রেড। ৪৭ মিনিটে করলেন টুর্নামেন্টে নিজের পঞ্চম গোলটি। ৫৫ মিনিটে রামোসের সেই পেনাল্টি মিসের পর থেকে ম্যাচটা এক রকম পানসেই হয়ে যায়। বোঝাই যায়, এখন যা হচ্ছে, স্পেনের জন্য সেটা নিজেদের শেষ সম্ভ্রমটুকু রক্ষার চেষ্টা, ব্রাজিলের জন্য উত্সবের অপেক্ষা। শেষ দিকে পেদ্রো ও ডেভিড ভিয়ার দুটো দুর্দান্ত প্রচেষ্টা অবশ্য নিষ্ফল করেছেন ‘সম্রাট’ সিজার। প্রথমার্ধের শেষ দিকে পেদ্রোর শটে গোলমুখী বলটাকে গোললাইনের কাছ থেকে অবিশ্বাস্যভাবে সেভ করেছেন লুইজও। এই ব্রাজিল শুধু আক্রমণেই ক্ষুরধার নয়, রক্ষণেও অটল-অটুট!
এ রাতে ব্রাজিলের তরফ থেকে একটা জিনিসই কেবল ঠিকঠাক হয়নি—দর্শক সারিতে মেক্সিকান ওয়েভ তৈরির চেষ্টা। অসুবিধা নেই, নিজেদের শাণিয়ে নিতে এক বছর সময় তো পেয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল। আসল উত্সবটাও না হয় ২০১৪ সালের ১৩ জুলাইয়েই হবে, মারাকানার ফাইনালেই!
বিস্তারিত পড়ুন

মুহিতকে একহাত নিলেন কাদের

মুহিতকে একহাত নিলেন কাদের
মুহিতকে একহাত নিলেন কাদের
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
ঢাকা: পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ওপর এক হাত নিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “বয়সের ভারে অর্থমন্ত্রী অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলেন।” এমনকি তিনি অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে  ‘মেমোরি ডাউন’, ‘এজ গোজ আপ’ ইত্যাদি বিশেষণও ব্যবহার করেন।

উল্লেখ্য, দরপত্র আহবান করা হলেও ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।  

বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার যে টাইট শিডিউলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এতে করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যাদেশ দেয়া সম্ভব হবে কি না। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।”

কিন্তু বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুর কাদের বলেন, “অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের যা বলেছেন, তা এভাবে উনি বলতে পারেন না। এটা টেকনিক্যাল কমিটির বিষয়। টেকনিক্যাল কমিটি এ বিষয়ে বলতে পারে।”

অর্থমন্ত্রীর ‘অতিকথন’ প্রসঙ্গে যোগাযোগমন্ত্রী আরও বলেন, “অর্থমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের কথা বলুক। কিন্তু তার কাজ সব মন্ত্রণালয় নিয়ে কথা বলা।”

রাজনীতিবিদদের সতর্কভাবে কথা বলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ওবায়দুল কাদের এ সময় বলেন, “জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝে কথা বলা উচিত।”

এছাড়া অর্থমন্ত্রীর বয়স হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন “তার (অর্থমন্ত্রী) এজ গোজ আপ, মেমোরি ডাউন, এ বয়সে এমন আমাদেরও হতে পারে”।

তবে পদ্মা সেতু কাজ শুরু হওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে তা যেন প্রকারান্তরে স্বীকার করেই নিলেন যোগাযোগমন্ত্রী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “স্ট্যান্টবাজি করে লাভ নেই, পদ্মা সেতু নির্মাণে সময় লাগবে ৪ বছর। বর্তমান সরকারের বাকি ৪ মাসে পদ্মা সেতুর মূল কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। এই ৪ মাসে আমরা বিপ্লব ঘটাতে পারবো না।”

‘তাহলে অর্থমন্ত্রীর পক্ষেই তো আপনার অবস্থান’, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, “উনি এ বিষয়ে কনসার্ন না। সেতু বিভাগের টেকনিক্যাল পারসন এ কথা বলতে পারেন।”

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “পদ্মা সেতুর মূল কাজের টেন্ডার হয়েছে। শিগগিরই এর ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হবে। তারপর সময় মত কাজও শুরু হবে। পরবর্তী ইলেকশন সব কিছু নয়, পরবর্তী জেনারেশনই সব কিছু। তাদের কথা চিন্তা করেই পদ্মা সেতুর কাজ করছি।”

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রিতা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন,“পদ্মা সেতুর বিষয়ে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। বিশ্বব্যাংক দ্বিতীয় দফায় যখন আবার ফিরে আসে, তখন আর অপেক্ষা করা ঠিক হয়নি। তখনই আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ ছিল। তাহলে আর এ বিলম্ব হতো না।”

এদিকে বৃহস্পতিবারও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে নিজের  বক্তব্যে অটল থাকেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ আমি কাগজপত্র দেখেই কথা বলেছি।”

তবে পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির পরস্পরবিরোধী  বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

বিস্তারিত পড়ুন

তামিমের বৌ-ভাতে খালেদা জিয়া

তামিমের বৌ-ভাতে খালেদা জিয়া

তামিমের বৌ-ভাতে খালেদা জিয়া

জাতীয় দলের ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আর্মি গলফ ক্লাবের গলফ গার্ডেনে অনুষ্ঠিত বৌ-ভাত অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী। এছাড়া এ অনুষ্ঠানে অনেকের মধ্যে আরো যোগ দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, নৌ বাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল মুহম্মদ ফরিদ হাবিব, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ ও ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদ। অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া তামিম ও তার নববধু আয়েশাকে নিয়ে খাবার খান।

এর আগে ২২ জুন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছিল চট্টগ্রামে।
গলফ গার্ডেনে এ ক্রিকেটার দম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমসহ সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা।

ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তারা তামিমের মা নুসরাত ইকবালের কাছ থেকে নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। সংগঠক, কোচদের সঙ্গে ক্রীড়া সাংবাদিকরাও বৌ-ভাতে যোগ দিয়েছেন।

বিস্তারিত পড়ুন

তামিমের বৌ-ভাতে খালেদা জিয়া

তামিমের বৌ-ভাতে খালেদা জিয়া

তামিমের বৌ-ভাতে খালেদা জিয়া

জাতীয় দলের ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আর্মি গলফ ক্লাবের গলফ গার্ডেনে অনুষ্ঠিত বৌ-ভাত অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী। এছাড়া এ অনুষ্ঠানে অনেকের মধ্যে আরো যোগ দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, নৌ বাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল মুহম্মদ ফরিদ হাবিব, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ ও ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদ। অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া তামিম ও তার নববধু আয়েশাকে নিয়ে খাবার খান।

এর আগে ২২ জুন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছিল চট্টগ্রামে।
গলফ গার্ডেনে এ ক্রিকেটার দম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমসহ সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা।

ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তারা তামিমের মা নুসরাত ইকবালের কাছ থেকে নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। সংগঠক, কোচদের সঙ্গে ক্রীড়া সাংবাদিকরাও বৌ-ভাতে যোগ দিয়েছেন।
বিস্তারিত পড়ুন

শেখ সেলিমের চ্যালেঞ্জ

শেখ সেলিমের চ্যালেঞ্জ
গত ৫ মের মতিঝিল অভিযান নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যদের চ্যালেঞ্জ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের তুলতে ওই অভিযানে বহু নিহত হয়েছে বলে বিরোধী সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, “একটা নাম-ঠিকানা দেন, রাজনীতি ছেড়ে দেব। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করুন।”
বুধবার জাতীয় সংসদে শেখ সেলিমের এই বক্তব্যের আগে এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ বলেন, “রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে গুলি করে হেফাজতের প্রায় আড়াই হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।”
ওই সময় সরকারি দলের সদস্যরা হৈ-চৈ করে ওঠেন। এরপর বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে শেখ সেলিম বিরোধী সদস্যদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
হেফাজতের পাশে ঢাকাবাসীকে দাঁড়াতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার আহ্বান জানানোর নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো ঈমানদার মানুষ কোরান পোড়াতে পারে না। আপনি (খালেদা জিয়া) এর কোনো প্রতিবাদ না করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন। এ কোন রাজনীতি!”
শেখ সেলিম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে। অংশীদার হতে চাইলে আসুন। নির্বাচনে কোনো কারচুপি হবে না। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে রায় আমরা মেনে নেব।”

বিএনপির মওদুদ আহমদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেন। আপনি একজন আইনীজীবী। আদালত যেটাকে অসাংবিধানিক-অবৈধ বলেছে সেটা কিভাবে রাখা যায়?”নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে ‘পানি ঘোলা’ না করতেও বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানান সরকারি দলের এই সংসদ সদস্য।
“নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা নির্বাচনকালীন কোনো সরকারের দাবি থাকলে বলুন, যুক্তিসঙ্গত হলে আমরা মেনে নেব।”
এলডিপি সভাপতি অলি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে ১০ লাখ বিনিয়োগকারী তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ তুলে নিয়ে বিদেশে চলে গেছে।
“যে অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজার বোঝেন না, লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ, তার ওই পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই।”
বিস্তারিত পড়ুন

আগামীকাল শিবিরের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

আগামীকাল শিবিরের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
আগামীকাল শিবিরের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
spacer image
আগামীকাল শিবিরের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নেতাকে গ্রেপ্তারের ৪৮ ঘণ্টা পরও আদালতে হাজির না করার প্রতিবাদে রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ছাত্রশিবির।

গত সোমবার বিকেলে ঢাকার শাহজাহানপুরের পিপলস ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে রাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের ছাত্রআন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান ও অর্থ সম্পাদক তাজাম্মুল হককে ডিবি পুলিশ আটক করে। কিন্তু আটকের ৪৮ঘণ্টা পরও পুলিশ তা অস্বীকার করছে।

এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ও অবিলম্বে আদালতে হাজিরের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন

ইসলামী ব্যাংক কারো ব্যক্তিগত নয়, সবার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ইসলামী ব্যাংক কারো ব্যক্তিগত নয়, সবার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
Sacharবুধবার বিকেলে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাচার বাজারে ইসলামী ব্যাংকের ২৭৭তম শাখা উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর।
ব্যাংক উদ্বোধনকালে মন্ত্রী বলেন, ইসলামী ব্যাংক কোনো ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয়। এই ব্যাংক সবার। তাই ইসলামী ব্যাংকের প্রতি সরকার সেই সদিচ্ছা দেখিয়েছে, তা আপনারাও দেখাবেন। সাচার ও কচুয়াকে দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য আমি বদ্ধপরিকর। সরকার দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাংক স্থাপন করছে।
বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, কোনো গোষ্ঠী বা দল আইনের বাইরে কোনো পদক্ষেপ নিলে ছাড় দেয়া হবে না।
ব্যাংকের কার্যকরী কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. ইসকান্দার আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান, জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী পাটওয়ারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুননাহার ভূঁইয়া, সাচার বাজার বণিক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন তালুকদার প্রমুখ।
বিস্তারিত পড়ুন

মাইকেল জ্যাকসনের বোনের ইসলাম গ্রহণ

মাইকেল জ্যাকসনের বোনের ইসলাম গ্রহণ
janet jaksonমাইকেল জ্যাকসনের বোন গায়িকা ও অভিনেত্রী জ্যানেট জ্যাকসন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
তিন বছরের ডেটিং শেষে কয়েকমাস আগে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কাতারের বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী উইসাম আল মানাকে বিয়ে করেন জ্যানেট।
এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জ্যানেট মধ্যপ্রাচ্যে চলে গেছেন এবং ধর্ম পরিবর্তনের পর নাম রেখেছেন জান্নাত। জ্যানেট সম্পূর্ণভাবেই গানের ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দিয়েছেন। এর আগে অবশ্য জ্যানেটও জানান, আমি গান ছাড়তে চাই যাতে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনযাপন করতে পারি এবং মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে পারি।
উইসামের সঙ্গে এটি ছিল জ্যানেটের তৃতীয় বিয়ে। এ বিয়ের পর থেকে জ্যানেট আর কোনো অভিনয় করেননি এবং তার কোনো গানও মুক্তি পায়নি। ২০১২ সালে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নয় বছরের ছোট উইসামকে বিয়ে করেন জ্যানেট।
বিস্তারিত পড়ুন

ইউনূস আসলেই রাজনীতিবিদ: মুহিত

ইউনূস আসলেই রাজনীতিবিদ: মুহিত
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করতে গিয়ে তাকে একজন ‘রাজনীতিবিদ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

 1248
 1
 0      Print Friendly and PDF
বুধবার জাতীয় সংসদে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে এক অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি বলেন, “তিনি (ইউনূস) প্রেস কনফারেন্স করালেন সরকারকে চাপ দেয়ার জন্য। তিনি আসলেই একজন রাজনীতিবিদ।
“তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। কিছু বলতে চাই না। তারপরেও বলতে বাধ্য হচ্ছি।”
বৈঠকের শুরুতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য মওদুদ আহমদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কাঠামো বিকেন্দ্রীকরণের চেষ্টা সরকারের জন্য ‘আত্মঘাতী’ হবে।
এরপর এ বিষয়ে প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা চলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৩ সালে একটি সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা হয়। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টাকে ‘শান্তি স্থাপন’ বিবেচনা করে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে।
এরপর ২০১০ এর ডিসেম্বরে নরওয়ের টেলিভিশনে প্রচারিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংককে দেওয়া বিদেশি অর্থ এক তহবিল থেকে অন্য তহবিলে স্থানান্তরের অভিযোগ ওঠে। এরপর দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনায় একটি কমিশন গঠন করে সরকার। সম্প্রতি কমিশন তাদের প্রতিবেদনে ব্যাংকের বর্তমান কাঠামো বদলে বিকেন্দ্রীকরণের সুপারিশ করে বলে গণমাধমের খবর।এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ২ জুলাই রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে একটি কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণ ও সরকারি শেয়ার বাড়ানোর পদক্ষেপ না নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের নয়জন নারী সদস্য।
গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই- ড. ইউনূসের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেন, “বক্তব্যটি মিথ্যা। সঠিক নয়।”
মুহিত বলেন, “ইউনূস সাহেব গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়ার পরে এখন অনেক উন্নত হয়েছে। উনি সময় দিতে পারতেন না। বোর্ড সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হতো না।”
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, তার দল আগামীতে ক্ষমতায় গেলে গ্রামীণ ব্যাংকের ‘সব ক্ষমতা’ ফিরিয়ে দেবে, আগের মতো ‘স্বাধীনতা’ দেব।
বিস্তারিত পড়ুন

শিবিরের বিক্ষোভ

শিবিরের বিক্ষোভ

শিবিরের বিক্ষোভ
কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ চৌদ্দগ্রামে ছাত্রলীগ কতৃক শিবির কর্মী হত্যার প্রতিবাদে জেলা ব্যাপি বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগরী । মহানগরী সভাপতি মনির আহমেদের নেতৃত্বে মিছিলটি  কুমিল্লা মহানগরীর প্রান কেন্দ্র কান্দিরপাড়ের সাত্তার খান থেকে শুরু হয়ে সালাউদ্দিন মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। 

মহানগর সভাপতি বলেন সরকার চারটি সিটি নির্বাচনে হারায় তাদের এম.পি /মন্ত্রিদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে । তারা যে কোন মুল্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। তার সুত্র ধরেই মেধাবী ছাত্র শিবির কর্মী আব্দুল আজিজ কে হত্যা করা হয়েছে ।

তিনি সরকারকে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন,হত্যা করে ,গুম করে, নির্যাতন চালিয়ে ,রিমান্ডে নিয়ে আপনারা যে স্বপ্ন দেখছেন তা বাস্তাবায়ন হবে না। বরং মানুষ প্রতিবাদী হবে। হত্যাকারীরা সমাজে চিহ্নিত, অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবী করেন তিনি।

এ ছাড়া মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যান সম্পাদক মোঃ মাহবুবুর রহমান, সাবেক শহর সেক্রেটারী মোঃ হোসাঈন,সাবেক দঃ জেলা সভাপতি ইসরাঈল মজুমদার, মহানগর সেক্রেটারী মোঃ শাহআলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, ছাত্র নেতা মোজাম্মেল হক, শাহাদাত হোসেন, জামাল আহমেদ মোল্লা, শাহেদূল ইসলাম, ফরহাদ উদ্দিন, হাবিবুর রহমান প্রমূখ।
বিস্তারিত পড়ুন

মাত্র একমাসে কোরআনে হাফেজ অন্ধ ২ শিশু সহোদর!

মাত্র একমাসে কোরআনে হাফেজ অন্ধ ২ শিশু সহোদর!

hafezজন্ম থেকেই পৃথিবীর আলো দেখেনি তারা। ছোটবেলা থেকেই কোরআন শোনার প্রতি আগ্রহ ছিল দু’জনের। যেখানেই কোরআন তেলাওয়াত হতো সেখানেই ছুটে যেত। চোখে না দেখলেও মন দিয়ে শুনতো কোরআনের সূরাগুলো। আর সেই আগ্রহ থেকেই কোরআনে হাফেজ হলো ৭ বছরের দু’সহোদর।
যেমন কণ্ঠস্বর, তেমন মায়াবী চেহারা তাদের। যেন একই বৃন্তে দু’টি ফুটন্ত গোলাপ। দু’ভাইয়ের কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে মুগ্ধ ফরিদগঞ্জবাসী। জন্মান্ধ হয়েও শুনে শুনে পবিত্র কোরআন মুখস্ত করেছে ৭ বছরের জমজ দু’ভাই হাসান-হোসাঈন।
শনিবার চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের মাহফিলে দু’ভাইয়ের কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে মুসলিমরা শুধু মুগ্ধই হননি, পুরস্কৃতও করেন তাদের।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সাহেবগঞ্জ গ্রামের কামিন উদ্দিন ছৈয়াল বাড়ির মো. আলমগীর হোসেনের জমজ এ দু’সন্তান হাসান-হোসাঈন।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়ার পর যখন তারা সমাজের চোখে অবহেলিত ছিল, তখন বাবা-মা তাদের কোরআনে হাফেজ করে সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য করার স্বপ্ন দেখলেন।
গত এক মাস আগে হাসান-হোসাঈনের বাবা মো. আলমগীর হোসেন তাদের ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ইমাম আলহাজ মো. নজরুল ইসলামের কাছে কোরআন শিক্ষার জন্য ভর্তি করিয়ে দিয়ে যান।
মাত্র এক মাসে আলহাজ মো. নজরুল ইসলামের নিরলস প্রচেষ্টায় তারা এখন কোরআনে হাফেজ। তারা শুধু কোরআনের সূরাগুলো মুখস্ত বলতেই পারে না। শুদ্ধ তেলাওয়াতও করতে পারে।
এ ব্যাপারে আলহাজ মো. নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা দু’জনই আমার ছাত্র। ইচ্ছাশক্তি থাকলে অন্ধ থেকেও যে আল্লাহর কালাম শরীফ পবিত্র কোরআন যে কেউ মুখস্ত করতে পারে হাসান-হোসাঈন তার বাস্তব উদাহরণ। আমি আশাবাদী, ওরা আগামীতে আরো ভালো করবে।
বিস্তারিত পড়ুন

দীপিকাকে কোলে নিয়ে শাহরুখের ৮০০ কদম

দীপিকাকে কোলে নিয়ে শাহরুখের ৮০০ কদম
 দীপিকা পাডুকোনকে কোলে নিয়ে নাকি টানা আটশ কদম হেঁটেছেন কিং খান শাহরুখ। উভয় তারকার আসছে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবির শ্যুটিংয়েই শাহরুখ দীপিকাকে কোলে এই কাজটি করেছেন।
 
জানা যায়, ভারতের চেন্নাইতে সাধারণত বিয়ের সময় স্বামী তার স্ত্রীকে কোলে নিয়ে আটশ কদম হেঁটে থাকেন। এটিকে ওই এলাকায় বলা হয় মুননার। যার ফলে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে শক্ত বোঝাপড়া তৈরি হয় বলে মানুষের বিশ্বাস।
 
‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবির শ্যুটিংয়ের সময় নাকি এই দৃশ্য দেখেই দীপিকা মজা করে শাহরুখ তাকে কোলে নিয়ে এটি করতে পারবেন কিনা জিজ্ঞাসা করেন। এসময় দীপিকা শাহরুখের শক্তি নিয়ে মজা করা শুরু করেন। আর তারপরেই শাহরুখ দীপিকাকে কোলে তুলে নেন এবং নাকি টানা ৮০০ কদম হেঁটে দেখান।
 

বিস্তারিত পড়ুন

১০ বছরের জেল হতে পারে সালমানের!

১০ বছরের জেল হতে পারে সালমানের!
ঢাকা টাইমস ডেস্ক

ঢাকা: ফের দুঃসংবাদ টিনসেল টাউনে। মুন্না ভাইয়ের পর এবার সম্ভবত হাজতবাস হতে চলেছে বলিউড মহাতারকা সালমানের।২০০২-এর গাড়ি চাপা দিয়ে ফুটপাথবাসীকে হত্যার মামলায় সালামন খানের আর্জি খারিজ করে দিল মুম্বাইয়ের সেশন কোর্ট।
এর অর্থ সালমানের বিরুদ্ধে এবার অনিচ্ছাকৃত হত্যার মামলা শুরু হবে। ভারতীয় পিনাল কোডের দুইয়ের ৩০৪ ধারায় মামলা হবে সালমানের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে দোষী সব্যস্ত হলে সর্বাধিক ১০ বছরের জন্য জেলের ঘানি টানতে হতে পারে রুাপালী জগতের এই সুপার খানকে। এর আগে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন বলিউডের টাইগার৷
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় সালমানের গাড়ির তলায় চাপা পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়৷ জখম হন চারজন৷
এর আগে একই ঘটনায় সালমান খানের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণহীন ড্রাইভিংয়ের অভিযোগ আনা হয়। যার শাস্তি ছিল সর্বাধিক দু`বছর। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সালমান খানের বিরুদ্ধে নয়া তথ্য প্রমাণ দিয়ে অনিচ্ছাকৃত হত্যার মামলা দায়ের করে পুলিশ।
২০০২-এ মুম্বাইয়ের শহরতলীতে ফুটপাথে শুয়ে থাকা অন্তত পাঁচজনের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন সালমান খান।
এর আগে রাজস্থানে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার দায়ে তিনদিনের হাজতবাস হয়েছিল সালমানের।
বিস্তারিত পড়ুন

দক্ষিণ এশিয়ায় কী চায় চীন

দক্ষিণ এশিয়ায় কী চায় চীন

কুনমিং মেলায় বাংলাদেশের স্টল
কুনমিং মেলায় বাংলাদেশের স্টল
৬ থেকে ১০ জুন চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘১ম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপজিশন ও ফোরাম’। চীন প্রথমবারের মতো এই এক্সপজিশন ও ফোরামে থিম কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশকে মনোনীত করেছে। এই ফোরামের উদ্দেশ্য ছিল মূলত চীন এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কৌশলগত অর্থনৈতিক ও সামাজিক যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল ও নীতি প্রণয়ন। এই এক্সপজিশনের অন্যতম রাজনৈতিক তাৎপর্য হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বহুমাত্রিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন।
চীন-দক্ষিণ এশিয়ার এক্সপজিশনের উচ্চপর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদল, ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল, দক্ষিণ এশিয়ার থিঙ্ক ট্যাংক নেতারা, সাংস্কৃতিক দল এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এই এক্সপজিশন ও ফোরামের উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল চীন-দক্ষিণ এশিয়া থিঙ্ক ট্যাংক ফোরামের সম্মেলন। এই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ থেকে নেতৃত্বদানকারী চিন্তকেরা অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, বর্তমান বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই চীন দক্ষিণ এশিয়ার নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে এই অঞ্চলে কৌশলগত অংশীদার থেকে পিছিয়ে থাকবে না।
বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় যে কৌশলগত পরিবর্তনগুলো আসছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ‘এশিয়ার ভারসাম্যের পুনর্বিন্যাস’-এর নীতির পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। কারণ, ২০০ কোটি মানুষের বসবাস এ অঞ্চলে। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বড় দেশ ভারত চীনের পাশাপাশি বিশ্বের একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এর বাইরেও, বিশ্বে যে অল্প কটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র আছে, তার মধ্যে স্থান করে নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। তা ছাড়া ভারত মহাসাগর এবং আরব সাগরের কোল ঘেঁষে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থানের কারণে এই অঞ্চল একটি ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত অবস্থানে পৌঁছেছে। ইদানীং চীনের এ অঞ্চলের প্রতি তাদের আগ্রহের কারণে দেখা যায়, পাকিস্তানের গোয়াদার এবং শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটায় তারা বন্দর স্থাপন করেছে। ভারতীয় কিছু কৌশলগত চিন্তাবিদ এর নাম দিয়েছেন ‘মুক্তার মালা’। উল্লেখ করা হয়েছে যে চীন তার আধিপত্যবলয় সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ভারত মহাসাগরকে মুক্তার মালার মতো বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত নৌবন্দর দিয়ে ঘিরে ফেলবে। অনেকের মতে, সেই ধারাবাহিকতায় তাদের পরবর্তী দৃষ্টি পড়বে মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দর ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে। তবে, বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে বর্তমান বিশ্বে যে নতুন শক্তির উত্থান হচ্ছে, তার কার্যত প্রতিযোগিতার প্রধান স্থান হতে যাচ্ছে ভারত মহাসাগর। 
ইতিমধ্যে এই কৌশলগত প্রতিযোগিতার নিদর্শন হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনীর ব্যাপক উন্নয়ন এবং ভারত মহাসাগরে তাদের বলিষ্ঠ অবস্থানের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র দেশগুলো ভারত মহাসাগরে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে অগ্রসর হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী এবং তার আরও চারটি মিত্র দেশ যেমন ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও জাপান ভারত মহাসাগরে মালাবার নামে একটি বৃহৎ নৌ-মহড়া করে, যার মাধ্যমে এই নৌ-অঞ্চলে প্রথমবারের মতো দুটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার গ্রুপ অবস্থান নেয়। লক্ষণীয় বিষয়, এই মহড়ায় চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং তার পরপরই চীনের কৌশলগত চিন্তাবিদেরা তাঁদের লেখায় উল্লেখ করেছিলেন যে ভারত মহাসাগরে তাদের অবস্থান আরও জোরদার করতে হবে এবং কোনোক্রমেই ভারত মহাসাগরকে ‘ভারতের মহাসাগর’ হতে দেওয়া যাবে না। এই কৌশলগত উপলব্ধির কারণেও বর্তমান দক্ষিণ এশিয়ামুখী চীনের এই উদ্যোগটি একটি ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে লক্ষ করা যাচ্ছে। এসব কারণেই চীন দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী। আরও লক্ষণীয় যে এই অঞ্চলে গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপন চীনের দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়, যা কি না শুধু অর্থনৈতিক বন্দর হবে না বরং প্রয়োজনে সামরিকভাবেও ব্যবহূত হতে পারে।
অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যের দিক থেকেও চীনের দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। শুধু ভারতের কথাই ধরা যাক। ২০০৫ সালে চীন-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার, যা এ বছর ৭৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে গেছে। তারা আশা করছে, ২০১৫ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। তবে এটা মনে করা হয়তো সমীচীন হবে না যে চীনের দক্ষিণ এশিয়ামুখী নীতি মূলত ভারতের কারণে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাগত দিক থেকে প্রতিযোগী চীন। তাই দক্ষিণ এশিয়া যাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে চলে না যায়, চীন সে কারণেই নানা উদ্যোগ ও কৌশল নিচ্ছে। কারণ, একই অঞ্চলের দেশ হিসেবে চীন কখনোই চাইবে না যে দক্ষিণ এশিয়ায় তার প্রভাব ক্ষুণ্ন হোক। তবে এটা নতুন বিষয় নয়, বরং চীন এ অঞ্চলে তার কৌশলগত অবস্থান সক্রিয় ও পুনর্নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে। এসব কিছুর পাশাপাশি, এ অঞ্চলের গুরুত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় সম্প্রতি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ক্ষমতা গ্রহণের পর তাঁর বিদেশ সফরের প্রথম দেশ হিসেবে যখন দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে বেছে নেন। এ সফরের মাধ্যমে প্রকাশিত যৌথ ইশতেহারে চীন একটি চতুর্পাক্ষিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উদ্যোগ যেমন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, উপ-আঞ্চলিক গোষ্ঠী স্থাপন এবং নতুন অর্থনৈতিক উন্নয়ন স্থাপনের কথা উল্লেখ করে। এ চিন্তাধারা বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা গঠিত বিসিআইএমেরই একটি নতুন প্রতিফলন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে চীন এ অঞ্চলে নতুন অর্থনৈতিক করিডর স্থাপনে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে যাচ্ছে এবং এ উদ্যোগে বাংলাদেশের একটি ফলপ্রসূ অবদান রাখার সুযোগ আছে, যা থেকে আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারব। 
এবার আসা যাক বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব চীনের কাছে কোনো অংশে কম নয়। বাংলাদেশের যে ভূ-রাজনৈতিক সম্পদ বা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভারত মহাসাগরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের অবস্থান। তা ছাড়া বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, বিশেষ করে এর চারদিকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র ভারতের অবস্থানের কারণেও চীনের কাছে এর গুরুত্ব অধিক। এমনকি বাংলাদেশকে চীন তার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করতে চায়, তার অপর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরির জন্য। অর্থনৈতিক দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। এ বছরও দুই দেশের মধ্যে ৩৭ শতাংশ বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক দশক ধরে চীন বাংলাদেশকে তার আমদানিপ্রধান রাষ্ট্র হিসেবে বেছে নিয়েছে। এমনকি চীন ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের ওপর কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে। সামরিক দিক থেকেও এ দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। 
বাংলাদেশ হলো দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান দেশ, যা চীনের কাছে থেকে সব সময় সামরিক সুবিধাদি পেয়ে থাকে। ২০১২ সালে চীন ও বাংলাদেশ ‘প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি’ স্বাক্ষর করেছিল সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যেসব ডুবোজাহাজ খুব শিগগির সংযোজিত হবে, তা খুব সম্ভবত চীন থেকে ক্রয় করা হবে। যদিও ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি ভারত দ্বারা প্রভাবিত (সদ্য প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের কান্ট্রি রিপোর্ট অনুযায়ী) এবং রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের অস্ত্র ক্রয়ের চুক্তির বিষয়ে চীনের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে হালকা চিড় ধরেছে বলে বিশেষজ্ঞ মহলে ধারণা করা হচ্ছে, প্রকৃত পক্ষে সে রকমের বড় কোনো ধরনের ধস এখনো নামেনি। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ সম্প্রতি পরিলক্ষিত না হলেও, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বিদ্যমান আদান-প্রদানের যে সম্পর্ক রয়েছে, তাতে আমূল পরিবর্তন আসেনি।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমাগত আগ্রহ শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে না, বরং তা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেও সহায়ক হবে। বিশেষ করে, দক্ষিণ এশিয়ার সামষ্টিক বিষয় ভারতকেন্দ্রিক হওয়ার কারণে এতদঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রায়ই বজায় রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যার কারণে এই অঞ্চলের নীতিগুলো ভারতের স্বার্থে নির্ধারিত হয়। এ ধরনের একমুখী পরিবেশ থেকে বের হয়ে আসার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের এই নতুন নীতির বলিষ্ঠ উদ্যোগ ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারবে। চীন ইতিমধ্যে সার্কের পর্যবেক্ষক দেশ হিসেবে স্থান নেওয়ার পরও কার্যত তাকে কোনো সক্রিয় ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়নি। আশা করা যাচ্ছে, চীনের এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে চীন সরাসরি সে অবস্থান সৃষ্টি করে নিতে পারবে এবং চীন-দক্ষিণ এশিয়া বহুমাত্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
আ ন ম মুনীরুজ্জামান: অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল। প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ।
বিস্তারিত পড়ুন

না খেয়ে কত দিন বাঁচা সম্ভব?

না খেয়ে কত দিন বাঁচা সম্ভব?

  • সাভারের ধসে যাওয়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমাকে উদ্ধার করা হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো
    সাভারের ধসে যাওয়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমাকে উদ্ধার করা হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো
  • রেশমা এখন
    রেশমা এখন
1 2
ধ্বংসস্তূপে ১৭ দিন! সাভারের ধসে যাওয়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে রেশমার বেঁচে থাকার কাহিনি ছুঁয়ে গেছে অগণিত হূদয়। আর সেই সঙ্গে কৌতূহলী মনে জেগেছে প্রশ্ন, খাবার আর পানি ছাড়া মানুষ কত দিন বাঁচতে পারে? বৈজ্ঞানিকভাবে এর উত্তর দেওয়া কঠিন। তবে প্রাকৃতিক আর মানবসৃষ্ট দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ, অনশন ধর্মঘট ইত্যাদি অনেক ঘটনার মাধ্যমে খাবার ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকার একটা ধারণা পাওয়া সম্ভব। 
১৯৮৫ সালে মেক্সিকো সিটিতে ভূমিকম্পের সাত দিন পর দুটি মেটারনিটি হাসপাতালের ধ্বংসাবশেষ থেকে বেশকিছু নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ১৯৯০ সালে ফিলিপাইনের লুজন অঞ্চলে ভূমিকম্পের পর একটি হোটেলের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৪ দিন পর জীবিত উদ্ধার করা হয় পেড্রিটো ডাইকে। ১৯৯৫ সালে ১৯ বছর বয়স্ক পার্ক সান হুন নামের এক নারী দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের ভেঙে যাওয়া পাঁচতলা সুপার মার্কেটের ভেতর ১৭ দিন বেঁচে ছিলেন। ২০০৪ সালে টার্কিতে ১৬ বছর বয়সের কালেমকে জীবিত উদ্ধার করা হয় প্রায় এক সপ্তাহ পর। অন্যদিকে ২০০৪ সালে ইরানের বাম শহরে ভূমিকম্পের নয় দিন পর শহরবানু মাজানদারানি নামের ৯৭ বছরের এক নারী ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার পান। অবশ্য তিনি পুরোপুরি না খেয়ে ছিলেন না।
সবচেয়ে বেশি দিন না খেয়ে বেঁচে ছিলেন পাকিস্তানের কাশ্মীরে ৪০ বছর বয়সী নকশা বিবি। ২০০৫ সালের ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া ঘরে ৬৩ দিন বেঁচে ছিলেন পচে যাওয়া খাবার আর অল্প কিছু চুইয়ে পড়া পানির ওপর। একই বছরে পাকিস্তানে ভূমিকম্পে ধসে পড়া একটি স্কুলের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে পাঁচ দিন পর তিনজন ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। ২০১০ সালে হাইতির প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে ধসে পড়া একটি বিপণিবিতানের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার হন ইভান্স মোন্সিজোনাক, যিনি টিকে ছিলেন পয়োনিষ্কাশন পাইপের পানি খেয়ে। একই ভূমিকম্পে ১১ দিনের এক শিশুকে এক সপ্তাহ পর জীবিত উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ বিস্ময় ঘটল বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে রেশমার বেঁচে থাকার ঘটনায়।
কোনো দুর্ঘটনার পর এক থেকে দুই দিনের মধ্যে কাউকে জীবিত উদ্ধার করতে না পারলে জাতিসংঘ সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তার চেয়েও বেশি দিন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মানুষ বেঁচে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) সমন্বয়কের মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকাটা নির্ভর করে দুর্ঘটনার সময় কী ঘটেছে তার ওপর। যদি গুরুতর আঘাত না হয়, অক্সিজেন ও পানির সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক থাকে, তবে আটকা পড়া ব্যক্তি অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। 
একদম না খেয়ে ঠিক কত দিন বাঁচা যায় তা হিসাব করা দুরূহ। তবে এ কথা বলা যায় যে খাদ্য বা পানীয় ছাড়া বেঁচে থাকার সীমা নির্ভর করে কিছু নিয়ামকের ওপর। ভুক্তভোগীর বয়স, শারীরিক সুস্থতা, ওজন, কাজের মাত্রা, জিনগত বৈশিষ্ট্য, মনোবল, পরিবেশের তাপমাত্রা ইত্যাদির ওপর বেঁচে থাকা নির্ভর করে। অসুস্থ একজনের তুলনায় সুস্থদেহের একজন ব্যক্তি না খেয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকবেন। আবার যাঁদের ওজন বেশি, বিশেষ করে চর্বি বেশি, তাঁদের সঞ্চিত শক্তি বেশি থাকায় তাঁরা বাঁচবেন বেশি দিন। 
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পানির উপস্থিতি। যদি পর্যাপ্ত পানি পান করা যায় তাহলে বেঁচে থাকা নির্ভর করে সঞ্চিত শক্তির ওপর। প্রাথমিকভাবে গ্লাইকোজেন ভেঙে গ্লুকোজ তৈরি হয়, যা শক্তির জোগান দেয়। কিন্তু গ্লাইকোজেনের ভান্ডার থাকে মাত্র ছয় ঘণ্টা। এরপর চর্বি ভেঙে ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হয়। তৃতীয় দিন থেকে ফ্যাটি অ্যাসিড দিয়ে কিটোন বডি তৈরি হয়, যা শক্তির জোগান দেয়। এভাবে যত দিন চর্বি থাকে তত দিন ফ্যাটি অ্যাসিড আর কিটোন বডির ওপর নির্ভর করা যায়। চর্বি শেষ হয়ে গেলে প্রোটিন ভাঙা শুরু হয়। এ পর্যায়ে দ্রুত দেহ ক্ষয় হতে থাকে, ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের চরম ঘাটতি দেখা দেয় এবং বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা কমে যেতে থাকে। একপর্যায়ে মৃত্যু ঘনিয়ে আসে। 
আমাদের শরীরের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ হলো পানি। সকল শারীরিক ক্রিয়া পানির ওপর নির্ভর করে। তাই শরীরে পানির তীব্র অভাব দেখা দিলে তা দ্রুতই পূরণ করতে হয়, তা না হলে দেহের বেশির ভাগ অঙ্গের কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং দ্রুতই মৃত্যু হয়। পানির অভাবে বেঁচে থাকা নির্ভর করে পরিবেশের তাপমাত্রার ওপর। খুব গরম পরিবেশে মাত্র এক ঘণ্টায় পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে আর তা পূরণ না করলে কয়েক ঘণ্টায় মৃত্যু হতে পারে। আবার ঠান্ডা পরিবেশে ঘাম কম দিলে পানি ছাড়াও বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকা যায়। 
তাহলে না খেয়ে কত দিন বাঁচা সম্ভব? যদিও এর কোনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উত্তর নেই, তবুও আমরা বলতে পারি, পানি পান করলে এবং আবহাওয়া অনুকূল হলে একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি অন্তত দুই মাস বেঁচে থাকতে সক্ষম। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি পান না করলে ওই একই ব্যক্তির পক্ষে দুই সপ্তাহের বেশি বেঁচে থাকা অস্বাভাবিক হবে। বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে হয়তো অনেক কিছুই বলা সম্ভব নয়, তবে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, এ ধরনের ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকা অলৌকিক ঘটনাই বলতে হবে। 
 লেখক: ডিন, মেডিসিন অনুষদ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
বিস্তারিত পড়ুন

কোথায় থাকবে মেয়েরা?

কোথায় থাকবে মেয়েরা?

—‘আন্টি, বাসা ভাড়া দেখে আসলাম। একটু দেখতে পারি। 
—কে থাকবে?
—আমরা কয়েক বান্ধবী থাকব। 
—মেয়েরা!! না না, আমি মেয়েদের ভাড়া দিই না। 
—কিন্তু লিখেছেন তো ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া হয়? 
—মেয়েরা আবার ব্যাচেলের হয় না কি? পড়াশোনা শেষ করেছ। এবার বিয়ে করো। 
ঢাকা মহানগরের একজন বাড়ির মালিকের সঙ্গে রুপা ও সাথীর কথোপোকথন। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন তাঁরা। হল ছাড়ার পর বাসা খোঁজার তিক্ত অভিজ্ঞতার এটা একটা শালীন উদাহরণ। তাঁরা এখন আছেন একটি ছাত্রী হোস্টেলে।
প্রতিবছর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রায় তিন লাখ ছাত্রছাত্রী স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে বের হন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, মোট শিক্ষার্থীর ৪০ ভাগই নারী। এদের একটি বড় অংশ জীবিকার সন্ধানে ও প্রয়োজনে আসেন ঢাকায়, যাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। রুপা-সাথীদের মতো এই নারীদের ৪০০ বছরের এই পুরোনো নগরে থাকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিনিয়ত তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। 
এ প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে নারীদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সমাজ মেনে নিতে পারলেও, উচ্চ শিক্ষিত নারীদের ব্যাপারে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এখনও নেতিবাচক। তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীরা দল বেঁধে বাসা ভাড়া করে থাকতে পারছেন। কিন্তু উচ্চ শিক্ষিত নারীরা পারছেন না। তিনি বলেন, নারীরা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে এগোচ্ছে, কিন্তু সমাজ এগোচ্ছে না। 
নিরাপত্তার অজুহাত, নানা শর্ত আর যন্ত্রণা: নীলক্ষেত স্টাফ কোয়ার্টারের বাসায় কক্ষ ভাড়া দেন আইয়ুব আলী। প্রথম আলো ডট কমকে তিনি বলেন, কোনো নারীকে ভাড়া দিলে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। অভিভাবকেরা বলেন, মেয়েকে আপনার জিম্মায় দিয়ে গেলাম। দেখে রাখবেন। দেখে রাখতে গেলে আবার ওই নারী অপমানিত বোধ করেন। 
দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার একজন জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা (নারী) বললেন, ‘একবার একজনকে প্রায় রাজি করিয়ে ফেলেছিলাম। বাড়িওয়ালা আমার ও আমার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট চাইলেন। সময়মতো সব হাজির করলাম। শেষ মুহূর্তে ভদ্রলোক বেঁকে বসলেন। বলেন, নিরাপত্তা দেবে কে?’ ওই নারী কর্মকর্তা বললেন, ‘আমি আমার এত বড় অফিসে এত মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারি, অথচ নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে আমাকেই থাকতে দেওয়া হলো না।’ 
চাকরিজীবী অপর এক নারী জানান, বাড়ির কর্ত্রী প্রতি মুহূর্তে তাঁকে বুঝিয়ে দেন, তিনি দয়া করে তাঁকে থাকতে দিয়েছেন। রাত আটটার মধ্যে বাসায় ঢুকতে হবে এবং আটটার পরে রান্নাঘরে ঢোকা যাবে না। ইস্ত্রি ও রাইস কুকার চালানো যাবে না। ফ্রিজ রাখলে ভাড়ার সঙ্গে অতিরিক্ত ৩০০ টাকা দিতে হবে। বাইরের কেউ আসতে পারবে না, এমনকি ভাই-বোনও নয়। এ রকম নানা শর্তের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলার চেষ্টা করেন বাড়ির মালিকেরা। 
নারীরা যে শুধু বাড়ির মালিকদের অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন, তা নয়। অভিযোগ রয়েছে পুরুষ তত্ত্বাবধায়কদের বিরুদ্ধেও। গল্পটি বলছিলেন একজন নারী সাংবাদিক। কাহিনীটি এমন-দুর্ব্যবহার সহ্য করতে না পেরে তাঁর এক বন্ধু ওই তত্ত্বাবধায়কের গালে চড় কষিয়েছিলেন। কিন্তু পুরুষ হয়ে নারীর হাতের চড়, একেবারেই মানতে পারেননি ওই তত্ত্বাবধায়ক। তিনি শোধ তোলেন অন্যভাবে। প্রায়ই দেখা যায়, সব বাসায় আলো জ্বলছে, শুধু তাঁর (ওই সাংবাদিক) বাসা বাদে। একই অবস্থা ছিল পানি নিয়েও। 
সুযোগ সীমিত: রাজধানীতে কর্মজীবি নারীদের জন্য নীলক্ষেত কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল, মিরপুরে নওয়াব ফয়জুন্নেসা কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল ও খিলগাঁয়ে আছে বেগম রোকেয়া কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল। তিনটিতে মিলে আবাসনের সুযোগ আছে হাজার খানেক নারীর। নীলক্ষেত কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলটিতে পাঁচ শ নারীর থাকার ব্যবস্থা আছে। হোস্টেলের সহকারি সুপার শাহানা সুলতানা বলেন, ‘প্রতিদিন কমপক্ষে একজন নতুন মানুষ আসেন একটি আসনের খোঁজে। গড়ে মাসে ৩০টি আবেদনপত্র তো জমা পড়েই, আর খালি হয় ছয়-সাতটা আসন। আমরা যখন আসন বরাদ্দের বৈঠকে বসি তখন পুরনো আরও ছয়-সাত মাসের তালিকা যুক্ত হয়।’
রাজধানীর ফার্মগেট, মণিপুরিপাড়া, নীলক্ষেত, আজিমপুরের কোথাও কোথাও কর্মজীবী মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা আছে। তবে সেসব বাড়ি বা কক্ষের অবস্থা করুন। চমত্কার বিজ্ঞাপণ দেখে এসব হোস্টেলে গিয়ে অনেকেই চোখের পানি ফেলেন। 
এ সমস্যার সমাধান কি? প্রতিনিয়ত কর্মক্ষেত্রে নারীদের যুক্ত হওয়ার হার বাড়ছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো যে লেবার ফোর্স সার্ভে করে তাতে দেখা যায়, ২০০২-০৩ সালে শ্রমবাজারে নারীর উপস্থিতি ছিল ১০ দশমিক তিন শতাংশ, সেটি ২০১০ এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক দুই শতাংশে। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হওয়া দরকার। সেই সঙ্গে দরকার সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আরও হোস্টেল তৈরির।
বিস্তারিত পড়ুন

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য

১৪ জুন পত্রিকায় প্রকাশিত দেশের জনগণের দারিদ্র্য হ্রাসের প্রশংসনীয় সাফল্য-সম্পর্কিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের খবরটি পরদিন অনুষ্ঠিত চারটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোটের ভরাডুবির খবরের ডামাডোলে প্রায় হারিয়ে গেছে। অথচ, ওই সাফল্যের স্বীকৃতি সারা দুনিয়ার কাছে ‘চমকপ্রদ’ বিবেচিত হবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস। বিশ্বের ‘সর্বাধিক জনসংখ্যার ঘনত্বের’ এই দেশটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্য হ্রাসের সংগ্রামে জাতিসংঘ ঘোষিত আটটি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সবচেয়ে গুরুত্ববহ প্রথম লক্ষ্যটিই নির্ধারিত সময়সীমা ২০১৫ সালের দুই বছর আগেভাগেই অর্জন করেছে—এ খবরটি উন্নয়ন-চিন্তকদের কাছে নিঃসন্দেহে আনন্দের।
পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২০০০ সালের বার্ষিক অধিবেশনে ওই আটটি এমডিজি বা মধ্যমেয়াদি উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা গৃহীত হয়েছিল, যার প্রথমটিতে ১৯৯০ সালের দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী বাংলাদেশের ৫৮ শতাংশ জনসংখ্যাকে ২০১৫ সালে ২৯ শতাংশে হ্রাস করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করা হয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সঠিক পথে থাকা বিশ্বের মাত্র ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। তাই FAO ওই ২০টি দেশকে সাফল্যের ডিপ্লোমা প্রদানের জন্য যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল, সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ১৭ জুন ডিপ্লোমাটি গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালেই বাংলাদেশ যেহেতু ২৯ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে ফেলেছে, তাই ২০১৫ সালে এ দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী জনসংখ্যা ২৫ শতাংশেরও নিচে নামিয়ে আনা যাবে বলে আশা করা যায়।
অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমি দারিদ্র্য সমস্যাকে সমাজব্যবস্থার বিদ্যমান উৎপাদনব্যবস্থা ও বণ্টনব্যবস্থা (উৎপাদন সম্পর্কসমূহ) এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বিন্যাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করি। আমার দৃঢ় অবস্থান হলো আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ‘সিস্টেম’ প্রতিনিয়ত সমাজে দারিদ্র্য সৃষ্টি ও পুনঃসৃষ্টি করে চলেছে। মাঠপর্যায়ের গবেষণা ও তাত্ত্বিক গবেষণার ভিত্তিতে রচিত আমার বই The Poverty Discourse and Participatiory Action Reserch in Bangladesh গবেষণা সংস্থা রিসার্চ ইনশিয়েটিভ থেকে ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে। মোট ১২টি প্রধান প্রক্রিয়ায় এ দেশে দারিদ্র্য সৃষ্টি ও পুনঃসৃষ্টি হচ্ছে বলে আমার গবেষণায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এখানে প্রধান কয়েকটি প্রক্রিয়া ও ক্ষেত্র সম্পর্কে আলোচনা করছি। এ দেশে দারিদ্র্য সৃষ্টি ও পুনঃসৃষ্টির প্রধান ক্ষেত্র স্বাভাবিকভাবেই কৃষি খাত। কৃষি খাতের নিচের প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে তা প্রধানত ক্রিয়াশীল:
১. ভূমির মালিকানা খণ্ডবিখণ্ড হওয়ার মাধ্যমে কৃষি জোতের আয়তন হ্রাস;
২. ভূমিহীনতার মারাত্মক প্রাদুর্ভাব;
৩. ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের নিঃস্বায়ন ও প্রান্তিকীকরণ প্রক্রিয়া;
৪. অনুপস্থিত ভূস্বামীদের হাতে ভূমি মালিকানার পুঞ্জীভবন এবং এর ফলে ভূমিস্বত্ব-ব্যবস্থায় বর্গাদারির ক্রমবর্ধমান বিস্তার;
৫. কৃষিজাত দ্রব্য বাজারজাতকরণে দালাল, ফড়িয়া, মহাজন, পাইকারদের মতো মধ্যস্বতভোগীদের দৌরাত্ম্যে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে ব্যর্থতা;
৬. কৃষকের ঋণগ্রস্ততা ও মহাজনি ব্যবস্থার অব্যাহত দৌরাত্ম্য;
৭. বন্যা, নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, কালবৈশাখীর কারণে কৃষকের ঘরবাড়ি, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, গৃহস্থালি দ্রব্যাদি ও কৃষি উৎপাদনের বিপর্যয়;
৮. কৃষি উপকরণের বাজারীকরণ বৃদ্ধির কারণে কৃষিকাজ না পোষানোর সমস্যা।
যথোপযুক্ত কৃষি সংস্কার ও ভূমি সংস্কার নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালা রাজ্যের মতো এ দেশেও কৃষি খাতে দারিদ্র্য সৃষ্টির প্রক্রিয়াগুলোকে মোকাবিলা করা সময়ের দাবি হলেও কোনো সরকারই ব্যবস্থা নেয়নি। তবে বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষকবান্ধব বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সাম্প্রতিক কালে দেশের কৃষি খাতে উল্লেখযোগ্য গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। ধান উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছি আমরা। তরিতরকারি ও মাছ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধিও সন্তোষজনক। খাদ্যশস্যের দাম মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গ্রামীণ জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা অর্জনে লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এরই প্রতিফলন ঘটেছে গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার মাধ্যমে। এমনকি শহরাঞ্চলের শ্রমজীবী বিত্তহীন জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য নিরসনেও গতি সঞ্চার হয়েছে।
দারিদ্র্য হ্রাসের প্রক্রিয়ায় অভিবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশের ৮০ লাখ থেকে এক কোটি মানুষ এখন বিদেশে অভিবাসন করেছেন বলে ধারণা করা হয়। এসব প্রবাসী বাংলাদেশির ৯০-৯৫ শতাংশই স্বল্প শিক্ষিত, কম দক্ষ গ্রামীণ তরুণ জনগোষ্ঠী, যাঁরা বিদেশে নিম্ন মজুরির কাজে নিয়োজিত। কিন্তু, স্ত্রী-পুত্র-কন্যা, মা-বাবা, ভাইবোন ও আত্মীয়স্বজনের প্রয়োজন মেটানোর তাগিদে এবং পরিবারের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁদের নিম্ন আয়ের একটা বড় অনুপাত নিয়মিতভাবে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন নানা চ্যানেলে। গত অর্থবছরে বৈধ চ্যানেলসমূহের মাধ্যমে দেশে আসা রেমিট্যান্সের প্রবাহ ১৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, এ বছর সেটা ১৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। এর বাইরে হুন্ডি-প্রক্রিয়ায় আসা এবং দেশে আসা প্রবাসীদের সরাসরি বহন করা মালামাল ও বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহের পরিমাণ আরও ছয় বিলিয়ন থেকে আট বিলিয়ন ডলার হতে পারে। অতএব, বৈধ-অবৈধ পথে প্রতিবছর অর্থনীতিতে বৈদেশিক রেমিট্যান্স যোগ হচ্ছে ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, যা দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পালে জোর হাওয়া লাগিয়ে চলেছে। দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা কয়েক বিলিয়ন ডলার পুঁজি প্রতিবছর বিদেশে পাচার না করলে এবং অর্থনীতিতে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠনের প্রকোপ কিছুটা কমাতে পারলে দেশের জিডিপি এবং জিএনআইয়ের প্রবৃদ্ধির হার ইতিমধ্যে ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যেত। (জিএনআই হলো জিডিপি ও নিট রেমিট্যান্সের যোগফল। নিট রেমিট্যান্স হলো বিদেশ থেকে দেশে আসা রেমিট্যান্স এবং দেশ থেকে বিদেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের পার্থক্য।) দেশের জনগণের দারিদ্র্য হার হ্রাসের গতি ত্বরান্বিত হওয়ার পেছনে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কৃষি খাতের সাফল্যের প্রায় সমপর্যায়ের অবদান রাখছে।
এর কাছাকাছি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে গার্মেন্টস ও নিটওয়্যার শিল্প খাতের চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই অর্জিত হচ্ছে এই খাত থেকে। আবার এই খাতের জন্য মেশিনারি, ম্যাটেরিয়ালস ও এক্সেসরিজ আমদানিতে ব্যয় প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। তাই এ খাত থেকে বাংলাদেশের নিট রপ্তানি আয় ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি নয়। (সে হিসাবে জনশক্তি রপ্তানি খাতই দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের সূত্র।) তা সত্ত্বেও তৈরি পোশাকশিল্প প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে জনগণের দারিদ্র্য হ্রাসের প্রক্রিয়ায় বিশাল অবদান রেখে চলেছে। জনগণের সবচেয়ে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর নারী সমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে এই খাতটি দেশে একটি সামাজিক বিপ্লবের সূচনা করেছে বলা চলে।
অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের যুগান্তকারী উদ্ভাবন ‘ক্ষুদ্রঋণ’ এ দেশের গ্রামীণ নারী সমাজের দারিদ্র্য নিরসনকে ত্বরান্বিতকরণের আরেকটি চলমান বিপ্লবের অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। এ দেশের কয়েক হাজার এনজিওর বেশির ভাগই দুই দশক ধরে গ্রামীণ নিম্নবিত্ত জনগণের কাছে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাই প্রধানত পালন করে চলেছে। ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হারের তুলনায় বেশি এবং এ জন্য ক্ষুদ্রঋণের সমালোচকদের কাছে এটা একটা বহুল ব্যবহূত সমালোচনার অস্ত্র। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণের সুদের হারকে তুলনা করা উচিত মহাজনি সুদের হারের সঙ্গে, বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হারের সঙ্গে নয়। ক্ষুদ্রঋণের নানা রকম ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বীকার করতে হবে, যেসব ঋণগ্রহীতা ঋণের টাকা ভোগে অপচয় করে না, তাদের প্রায় ২৮-৩০ শতাংশ উপার্জনশীল বিনিয়োগে ঋণের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে নিজেদের পরিবারকে টেনে তুলতে সমর্থ হচ্ছে। তাই ক্ষুদ্রঋণকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করাটা স্রেফ মতলববাজি।
জনগণের একেবারে হতদরিদ্র অংশের জীবন ও জীবিকার কঠোর সংগ্রামে সহায়তা করার জন্য এ দেশের সরকারি ব্যয়ের একটা অংশ সামাজিক নিরাপত্তা জাল কর্মসূচিগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হয়। এ ধরনের কর্মসূচির সংখ্যা প্রায় ৯০। সহায়তাপ্রাপ্ত জনগণের সংখ্যাও প্রায় আড়াই কোটি বলে সরকার দাবি করছে। এ কর্মসূচিগুলোর বেশির ভাগই দরিদ্র জনগণের জীবনকে কিছুটা সহনীয় করতে সামান্য অবদান রাখছে। এর মধ্যে আবার বেশ কয়েকটি উৎপাদনশীল ও আয় বর্ধনকারী কার্যক্রমকে উৎসাহিতও করে চলেছে, যা দারিদ্র্য মোকাবিলায় ইতিবাচক ভূমিকা
পালন করে চলেছে। এতৎসত্ত্বেও বলা প্রয়োজন, সামাজিক নিরাপত্তা জাল কর্মসূচিকে মূল্যায়ন ও গবেষণার মাধ্যমে আরও কার্যকর করা সময়ের দাবি।
দারিদ্র্য নিরসনে অর্জিত এ দেশের জনগণের সাফল্যের পেছনে যেসব বিষয় প্রধান ভূমিকা পালন করেছে, সেগুলোকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমান গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই প্রধান প্রধান দারিদ্র্য সৃষ্টিকারী বিষয়কে। দারিদ্র্যের যমজ ভাই বলা হয় আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্যকে। যে সমাজে বৈষম্য বাড়ানোর আয়োজনগুলো শক্তিশালী করা হয়, ওই সমাজে দারিদ্র্য নিরসন কঠিন হওয়াই স্বাভাবিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গড় মাথাপিছু জিডিপি ৪৮ হাজার ডলার হওয়া সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের কারণে ১৭ শতাংশ মার্কিন জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে। ২০০৭ সালে এই অনুপাত ছিল ১১ শতাংশ। কিন্তু চলমান মন্দা এবং আয় ও সম্পদ বণ্টনের বৈষম্য বৃদ্ধির শিকার হয়ে গত ছয় বছরে আরও ৬ শতাংশ মার্কিন নাগরিক দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ে গেছে বলে দাবি করেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
শুধু আয় ও সম্পদ বণ্টনের বৈষম্যের কারণেই লাতিন আমেরিকার প্রাকৃতিক সম্পদে সম্পদশালী দেশ ব্রাজিল, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, পেরু, নিকারাগুয়া ও ইকুয়েডরের জনগণের বিশাল অংশ কিছুদিন আগেও দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ে ছিল! ওই সব দেশের নির্বাচিত বামপন্থী সরকারগুলো জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ‘বৈষম্য নিরসনকারী প্রবৃদ্ধি’ অর্জনের কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসের প্রক্রিয়াকে গত এক দশকে নাটকীয়ভাবে শক্তিশালী করতে সমর্থ হয়েছে। ভেনেজুয়েলার হুগো চাভেজ, ব্রাজিলের লুলা ডি সিলভা, নিকারাগুয়ার ওরতেগা, বলিভিয়ার মোরালেস—এসব নাম এখন দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সফল রাষ্ট্রনায়কদের তালিকায়। তাঁদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ দেশের জনগণের দারিদ্র্য সৃষ্টি ও পুনঃসৃষ্টির প্রক্রিয়াগুলোকে দুর্বল করে দিয়ে দেশের সম্পদকে দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে নিয়োজিত করতে সমর্থ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রক্রিয়াগুলো এ দেশেও বৈষম্য এবং দারিদ্র্য সৃষ্টি ও পুনঃসৃষ্টি করে চলেছে। তালিকাটা দেখুন:
১. শিক্ষা খাতে বৈষম্যমূলক শিক্ষাব্যবস্থার লালন,
২. স্বাস্থ্যব্যবস্থার বাজারীকরণ ও বৈষম্যমূলক চিকিৎসাব্যবস্থার বিস্তার;
৩. ব্যাংকিং-ব্যবস্থাকে ধনাঢ্য গোষ্ঠীর একচেটিয়া দখলে রাখা;
৪. সরকারি রাজস্ব ও ব্যয়ব্যবস্থার গণবিরোধী চারিত্র বহাল রাখা;
৫. রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির তাণ্ডব; এবং
৬. বৈদেশিক ঋণ ও সাহায্য নিয়ে দুর্নীতির মচ্ছব। সে জন্যই বলছি, এ দেশের জন্যও ‘বৈষম্য নিরসনকারী প্রবৃদ্ধি’ কৌশল গ্রহণ দারিদ্র্য নিরসনকে ত্বরান্বিত করার জন্য আশু প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ড. মইনুল ইসলাম: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।
বিস্তারিত পড়ুন

লিও মেসির জানা-অজানা দশ (ভিডিও)

 লিও মেসির জানা-অজানা দশ (ভিডিও)

এই সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত, ডেকোর বদলি হিসেবে মাঠে নামছেন মেসি। বার্সেলোনার হয়ে তাঁর লা লিগা অভিষে� এই সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত, ডেকোর বদলি হিসেবে মাঠে নামছেন মেসি। বার্সেলোনার হয়ে তাঁর লা লিগা অভিষেক, ২০০৪ সালের অক্টোবরে। মেসির মাঠে নামা দেখছেন তখনকার কোচ রাইকার্ড (বেঞ্চে বসা)
ফাইল ছবি
রোজারিও বুঝি বিপ্লবীদের আঁতুড়ঘর। বুয়েনস এইরেস থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের শহরটিতে জন্মেছিলেন চে গুয়েভারা, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের অন্যতম নেতা। এই রোজারিওতেই জন্মেছেন আরেক বিপ্লবী, যার রণক্ষেত্র ফুটবল মাঠে আর অস্ত্র বল। ফুটবলকেই যিনি পাল্টে দিয়েছেন জাদুমন্ত্রে। সেই বিপ্লবীর নাম লিওনেল মেসি। চের সঙ্গে তাঁর মিল আরেক জায়গায়। তিনিও জন্মেছেন জুনে, তবে তারিখটা ভিন্ন। চে ১৪-তে, আর মেসি ২৪-এ অর্থাত্ আজকের এই দিনে।
বার্সেলোনার এই আর্জেন্টাইন জাদুকরকে নিয়ে নতুন কিছু লেখাই বাহুল্য। তবে এই ফাঁকে আসুন জেনে নিই মেসি সম্পর্কে কম জানা এবং অজানা দশটি তথ্য—

এক. মেসি ইতালিয়ান!
মেসিকে নিয়ে গর্ব করতে পারে ইতালি। হতাশাও প্রকাশ করতে পারে ইতালি। গর্ব, কারণ মেসির দেহে আছে ইতালিয়ান রক্ত। হতাশা, কারণ মেসি ইতালির হয়ে তো আর খেলেন না! মেসির পূর্বপুরুষেরা ইতালির আনকোনার অধিবাসী ছিলেন। ১৮৮৩ সালে ভাগ্যের সন্ধানে অ্যাঞ্জেলো মেসি চলে আসেন আর্জেন্টিনায়।

দুই. গ্রান্দোলিতে শুরু
মেসির প্রথম ক্লাব হিসেবে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের কথা লেখা হয়। সেটা একদিক দিয়ে ঠিকই আছে। এখানে যুবদলে খেলেই পরে বার্সেলোনার বিখ্যাত ‘খামার বাড়ি’তে যাত্রা। তবে একেবারে নির্ভুল তথ্য চাইলে মেসির প্রথম ক্লাবটির নাম কিন্তু গ্রান্দোলি। রোজারিওর এই অপেশাদার ছোট্ট ক্লাবটি ছিল আসলে মেসির বাবা হোর্হের। সেখানেই পাঁচ বছর বয়সে শুরু করেছিলেন আজকের এই মহা তারকাটি।

তিন. কষ্টের শৈশব
শখের ফুটবল কোচ হলেও এ দিয়ে জীবন ধারণ করা সম্ভব ছিল না হোর্হের, সম্ভব ছিল না পরিবারের চাওয়া পূরণ করা। আর তাই কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হয়েছে হোর্হেকে। মেসির মা সেলিয়াও খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেছেন। ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোনের ঘাটতির অসুখ ধরা পড়ে। মাসে ৯০০ ডলারের ব্যয়বহুল এই চিকিত্সার ব্যয় মেটানো সম্ভব ছিল না মেসির পরিবারের পক্ষে।

চার. ন্যাপকিনেই ইতিহাস!
স্পেনের লেইদায় মেসির কিছু আত্মীয়স্বজন থাকতেন। তাঁদের মাধ্যমেই বালক মেসির অবিশ্বাস্য প্রতিভার খবর পান বার্সার তখনকার ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাস। অবশেষে মেসিকে ট্রায়ালে দেখতে রাজি হন। মেসিকে বার্সা নেবেই—এমন কোনো প্রস্তুতি সম্ভবত ছিল না রেক্সাসের। কারণ, বালক মেসির ফুটবল-ঝলক দেখার পর তাকে সঙ্গে সঙ্গে সই করানোর জন্য কোনো দলিল-দস্তাবেজ তো দূরের কথা, কোনো কাগজই ছিল না। কিন্তু কাগজের জন্য অপেক্ষা করতে আর তর সইছিল না রেক্সাসের। সঙ্গে থাকা ন্যাপকিনেই মেসির বাবার সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেন তিনি! মেসির চিকিত্সার সমস্ত ব্যয়ভারও গ্রহণ করে বার্সা।

পাঁচ. ভালোবাসার নাম আর্জেন্টিনা
মেসির নামের পাশে এত এত প্রাপ্তি। চার-চারবারের ফিফা বর্ষসেরা হয়েছেন। কিন্তু তার পরও তাঁর আক্ষেপের শেষ নেই। আরধ্য বিশ্বকাপ যে জেতেননি। মেসির নামের পাশে কিন্তু বিশ্বকাপ থাকতেই পারত। সেটি তিনি জিতে যেতেন ২০১০ বিশ্বকাপেই! যদি স্পেনের জাতীয় দলের প্রস্তাবটিতে ‘হ্যাঁ’ বলে দিতেন। ২০০০ সালে বার্সেলোনায় চলে আসেন মেসি। সিনিয়র দলে অভিষেক ২০০৪ সালে। এরই মধ্যে মেসি প্রস্তাব পেয়েছিলেন স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য। কিন্তু মেসি ঠিক করেন স্পেন নয়, তিনি খেলবেন নাড়িপোঁতা আর্জেন্টিনার হয়েই। মেসি অবশ্য পরে স্পেনের নাগরিকত্বও নিয়েছেন। ২০০৫ সাল থেকে তাঁর দুটো পাসপোর্ট।

ছয়. আর্জেন্টিনায় জনপ্রিয় নন!
সেদিনও এক সাক্ষাত্কারে মেসি স্বীকার করেছেন, বার্সেলোনা কিংবা সারা বিশ্বে তাঁর যতটা জনপ্রিয়তা, সেই তুলনায় নিজের দেশ আর্জেন্টিনায় তাঁকে নিয়ে ততটা মাতামাতি নেই। এর পেছনে বড় কারণ হলো, মেসি শৈশবেই চলে গিয়েছিলেন স্পেনে। আর্জেন্টিনার ফুটবলপাগল মানুষদের ভালোবাসা কুড়াতে হলে বোকা জুনিয়র্স কিংবা রিভার প্লেটের মতো ক্লাবের হয়ে মাঠ মাতাতে হয়। যেটি মেসি করেননি। ‘বার্সার মেসি আর্জেন্টিনার মেসি হয়ে উঠতে পারেন না’—এটিও তাঁর নিজ দেশে জনপ্রিয়তার পথে বড় বাধা। তবে আশার কথা, জাতীয় দলের হয়েও ফুল ফোটাতে শুরু করেছেন মেসি। নিজ দেশেও জনপ্রিয়তা বাড়ছে তাঁর। আর একটা বিশ্বকাপ এনে দিতে পারলে তো কথাই নেই!’

সাত. প্রেমিক মেসি
এই একটা ব্যাপারে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়ে ঢের পিছিয়ে আছেন। প্রেমের ময়দানে মেসি ঠিক পাকা খেলুড়ে নন। তবে তারপরও কিন্তু টুকটাক ভালোই ‘খেলেছেন’। প্রেমিকা আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোর সঙ্গে তাঁর সুখের সংসার। মেসি এর আগে মাকারেনা লেমস নামে এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম করেছেন। আর্জেন্টাইন মডেলকন্যা লুসিয়ানা সালাজারকে জড়িয়েও গুঞ্জন ছড়িয়েছিল।

আট. দাতা মেসি
রিয়াল মাদ্রিদকে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত করা সেই এল ক্লাসিকোতে দুটো গোল করেছিলেন মেসি। দুটো গোলের পরই জার্সির নিচের টি-শার্টটি উঁচিয়ে ধরে উদযাপন করেছিলেন। যেখানে লেখা ছিল, ‘ফ্র্যাজাইল এক্স সিনড্রোম’। অটিজমের জন্য দায়ী এই অসুখের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মেসি আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য গঠন করেছেন লিও মেসি ফাউন্ডেশন। আয়ের একটা বড় অংশ মেসি দান করেন এ সব দাতব্য কাজে।

নয়. দিনেই কোটি টাকা!
এ মাসে ফোর্বস সাময়িকী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়দের যে তালিকা দিয়েছে, তাতে মেসির অবস্থান ১০। বছরে মেসি আয় করেন চার কোটি ১৩ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩২১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা! অর্থাত্ প্রতিদিন মেসির আয় ৮৮ লাখ টাকারও বেশি, দিনের আয়েই মেসি প্রায় কোটিপতি! দুই কোটি তিন লাখ ডলার তাঁর বার্ষিক বেতন, আর বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন পণ্যের দূতিয়ালি করে মেসি পান দুই কোটি ১০ লাখ ডলার।

দশ. মেসির ভাইয়েরা
ডিয়েগো ম্যারাডোনার দুই ভাই হুগো ও রাউলও যে ফুটবলার ছিলেন, এই তথ্য পৃথিবীবাসীর অনেকেই জানে না। একইভাবে মেসির খ্যাতির আলোতে ম্লান তাঁর দুই ভাইও। এঁরা অবশ্য আপন ভাই নন, খালাতো ভাই। ম্যাক্সি ও এমানুয়েল বিয়ানকুচ্চি। মেসির মতোই নিউয়েলস ওল্ড বয়েজ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এমানুয়েল এখন খেলেন প্যারাগুয়ের ক্লাব অলিম্পিয়াতে। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ভিতোরিয়ার হয়ে এই মৌসুমে মাঠ মাতাচ্ছেন ম্যাক্সি।

সকালের সূর্যই বলে দেয় দিনটি কেমন যাবে। মেসি যে এক সময় ফুটবল দিয়ে বিশ্বজয় করবেন, সেটি বোঝা গিয়েছিল শৈশবেই। তাঁর শৈশবের ফুটবল-ঝলকের কিছুটা দেখুন:
বিস্তারিত পড়ুন