সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানাগেছে, বর্তমান নিয়োগ পদ্ধতির পুনর্বিন্যাস করে মেধা কোটা ৪৪ ভাগের স্থলে বাড়িয়ে ৪৯ ভাগে উন্নীত করা হচ্ছে। অন্যান্য কোটা অপরিবর্তিত থাকছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন উপদেষ্টা এইচটি ইমাম শনিবার একটি জাতীয় দৈনিক কে বলেছেন, ”কোটা পদ্ধতির সমন্বয়ের ব্যাপারে আমরা ভাবছি। মেধা ও কোটা ৫০ :৫০ নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে আলাপ করেছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।”
তবে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এইচটি ইমাম বলেন, “আন্দোলন করা হচ্ছে কোটা বাতিলের জন্য। এটা ঠিক নয়। কোটার সংস্কার তারা চাইতে পারে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে পৃথিবীর সব দেশেই কম-বেশি কোটা রয়েছে। আন্দোলনের ”ধরন” দেখে মনে হচ্ছে, তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাবিরোধী আন্দোলনে এটি পরিণত হয়েছে।”
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার বলেন, ”কোটা নিয়ে এত বড় আন্দোলন এর আগে কখনও হয়নি। এখন যেহেতু বিষয়টি সামনে এসেছে, তাই সরকার কোটা সংস্কারের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ৩০ শতাংশ পদ পূরণ হয় না। এ কোটা কমিয়ে আনা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মেধা কোটায় চাকরির সুযোগ বাড়বে।”
উল্লেখ্য, ৮ জুলাই ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ৯ জুলাই শাহবাগ মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ”বঞ্চিত মেধাবী”র ব্যানারে একত্র হয়। তারা সড়ক অবরোধ ও পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাংচুর করে। এমন প্রেক্ষিতে সরকার কোটা সংস্কার বিষয়ে উদ্যোগী হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের দিনই ”কোটা পদ্ধতি”র সংস্কার করতে বর্তমানে কোটার ব্যবহার ও পদশূন্যতা ইত্যাদি বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটায় নিয়োগের বাস্তবতা তুলে ধরে এরই মধ্যে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। দু”একদিনের মধ্যে এ প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সংশোধিত ফল আজ বিকেলে প্রকাশ করবে পিএসসি। তবে আগের ফল বহাল রেখেই সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হবে। এতে আরও ২০ থেকে ২২ হাজার শিক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষার সুযোগ পাবে।